আনন্দ বিহার – কুমিল্লা

আনন্দবিহার বাংলাদেশের অন্যতম সমৃদ্ধ ও প্রাচীন একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। আনন্দ বিহার(Ananda Bihar) ময়নামতীতে আবিষ্কৃত বৌদ্ধবিহারগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ বিহারটির বর্গাকৃতির, প্রত্যেক দিকের পরিমাপ ১৯৮ মিটার। এখানেও শালবন বিহারের মতো বর্গক্ষেত্রের চারটি বাহুতে সন্ন্যাসীদের কক্ষ লক্ষ্য করা যায়।

বিহারের খোলা আঙিনার মধ্যস্থলে অবস্থিত এক বিরাট ক্রুশাকার জমকালো মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরের চারপাশ ঘিরে এ কক্ষগুলি সন্নিবেশিত। বিহারের উত্তর দিকের মধ্যস্থলে রয়েছে এর একমাত্র মনোরম প্রবেশদ্বার। প্রবেশদ্বারের বহির্ভাগটি সুপরিসর ও বৃহদায়তন এবং এর বাইরের দিকটা সম্প্রসারিত।

‘অফসেট’ ও ছাঁচের তৈরি নকশার জন্য এর বহিঃপ্রাচীরটি দেখতে অপেক্ষাকৃত সুন্দর। ভেতরের বারান্দার দেয়ালও ছাঁচের অলঙ্করণ ও নকশা করা ইট দ্বারা সজ্জিত। এর উত্তর সারির কয়েকটি কক্ষ এবং মধ্যবর্তী মন্দিরের দক্ষিণ দিকের অংশবিশেষ খনন কাজের ফলে উন্মুক্ত হয়েছে।

এগুলি থেকে বোঝা যায় যে, এসব কক্ষ ও মন্দিরের অংশ হিসেবে একমসয় ব্যবহৃত হতো। এ বিহারে আবিস্কার হয়েছে একটি তাম্রশাসন, ৬৩টি রৌপ্য মুদ্রা, বহুসংখ্যক ব্রোঞ্জমূর্তি ও পোড়ামাটির ভাস্কর্য ফলক। মঠের বাইরে পাওয়া গেছে মৃৎপাত্র পোড়ানোর জন্য একটি ভাঁটি।
ধারণা করা হয়, এ এলাকার সর্ববৃহৎ পুকুরসহ আনন্দবিহার কমপ্লেক্সটি সপ্তম শতাব্দীর শেষ বা অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকের কোন এক সময়ে প্রথম দেববংশের তৃতীয় শাসক শ্রী আনন্দদেব তৈরি করেছিলেন।

কুমিল্লা কিভাবে যাবেন –

ট্রেনে করে আসলেঃ কুমিল্লা স্টেশন আসতে পারবেন ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, চাঁদপুর, নোয়াখালী ইত্যাদি স্থান থেকে, কুমিল্লা নেমে চলে আসবেন অটো-রিক্সা বা রিকশা করে কান্দিরপাড়, তার পর যাবেন নিচের বর্ণনা অনুসারে ভাড়া নিবে ১০ টাকা প্রতিজন। ট্রেন ভাড়া সম্পর্কে রেলওয়ে স্টেশনের নিজস্ব ওয়েব সাইট হতে জেনে নেবেন।

ঢাকা থেকে কুমিল্লা – ঢাকা যাত্রাবাড়ি থেকেএশিয়া ট্রান্সপোর্ট, এশিয়া লাইন বা তিশা ট্রান্সপোর্ট (এসি,নন-এসি দুটুই আছে), কমলাপুর থেকে রয়েল কোচ এয়ার কন্ডিশেন করে আসতে পারেন । রয়েল কোচ অনেক কমফোর্টেবল কিন্তু স্লো। যেকোনটিতে ঊঠে পড়ুন, আসার সময় দেখবেন বুড়িগঙ্গা ব্রিজ, মেঘনা ব্রিজ, দাউদকান্দি ব্রিজ আর দুপাশের রাস্তায় সকালের সুর্যিমামার আলোরশ্মি আপনাকে বিমহিত করবেই । আপনি প্রকৃতিপ্রেমি বিদায় নয়ন জুড়ানোর জন্য অন্য কিছু প্রয়োজন হবে না। দেখতে দেখতে চলে আসবেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এসে নেমে যাবেন অথবা কোটবাড়ি বিশ্বরোডে ও নামতে পারেন। ভাড়া নেবে ২০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত। ২থেকে ২.৫ ঘন্টা সময় লাগবে।

কোটবাড়ি বিশ্বরোডে থেকে কোটবাড়ি যেতে সি.এন.জিতে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ২০/৩০।

চট্রগ্রাম থেকে কুমিল্লা – সৌদিয়া ট্রান্সপোর্টে (এসি,নন-এসি) চড়ে আসবেন কুমিল্লার পাদুয়ার বাজার বিশ্বরোড দিয়ে জাঙ্গালিয়া নেমে যাবে, ভাড়া নেবে ২০০-২৫০ টাকা। ২.৫থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। চট্রগ্রাম বাসীদের কুমিল্লা-চট্রগ্রামে রোডের আশে পাশের দৃশ্য বর্ণনা করে দিতে হবে না, অপূর্ব সুন্দর এই পথের দু দিক। যাই হওক, জাঙ্গালিয়া নেমে চলে আসবেন টমছমব্রিজ অটোতে করে ৫টাকা নিবে।

কুমিল্লা শহর থেকে কোটবাড়ি- কুমিল্লা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার এবং ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা বাইপাস নন্দনপুর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই আর শালবন পাহাড়ের পাদদেশে কোটবাড়ীর।

কুমিল্লা টমছমব্রিজ চৌমুহনী হতে পশ্চিম দিকের রাস্তায় দাঁড়ানো সিএনজি যোগে কোটবাড়ি যেতে পারবেন। ভাড়া ২০ টাকা। দৌলতপুর হয়ে যাবে।

সিএনজি থেকে নেমে অটোতে আনন্দ বিহার বললেই নিয়ে যাবে।

 

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 12, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.