অষ্টগ্রাম হাওড় – কিশোরগঞ্জ

বর্ষাকালকে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত একটি স্থান হলো কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম। অষ্টগ্রাম মূলত একটি হাওড় বেষ্টিত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপজেলা। এমনকি শীতের সময়েও এখানে যেতে হলে নৌপথের সাহায্য নিতে হয়।  কিশোরগঞ্জ জেল শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ৬০ কি: মি: দূরত্ত্বে অষ্টগ্রাম উপজেলার অবস্থান।

চারপাশে পানিদ্বারা পরিবেষ্টিত একটি বিশাল জলাভূমি হল অষ্টগ্রাম হাওড় (Ashgram Haor) যেখানে দ্বীপের মত কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। এখানে আসলে কিছু মাছ ধরার নৌকা এবং হাওড়ে অবস্থিত গ্রামগুলোই আপনার চোখে পরবে। হাওড়ে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর সময় এখানকার গ্রামের বাড়িগুলোকে দেখতে বেশ সুন্দর দেখায়।

বিখ্যাত হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার পাশেই এর অবস্থান। কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এর পুরোটা, নিকলী, তাড়াইলও করিমগঞ্জের কিছু অংশ, নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ী, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের কিছু এলাকাজুড়ে এই হাওর বিস্তৃত। বর্ষায় বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে মহাসাগরের রুপ নেয়। বর্ষাকালে কোন রকম বাধা ছাড়াই আপনি এক হাওড় থেকে অন্য হাওড়ে যেতে পারবেন।

অষ্ট্রগ্রামে প্রচুর দুধ পাওয়া যায়। এখানকার পনিরও বিখ্যাত। চা খেতে খেতে আর আড্ডা দিতে দিতে প্রায় অনেক সময় চলে যেতে পারে। এবার আপনি কুতুব শাহ মসজিদ দেখতে যেতে পারেন। আপনি রিকশা নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন কুতুব শাহ মসজিদ। অনেক পুরোনো মসজিদ এ কুতুব শাহ। ধারণা করা হয়, ১৬ শতকের শেষদিকে বা ১৭ শতকের প্রথম দিকে একজন বুজুর্গ কুতুব শাহ মসজিদটি তৈরি করেন। পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির কারুকাজ অসাধারণ। এত বছর পরেও মসজিদটি মোটামুটি ভালো অবস্থাতেই আছে।

যেভাবে যাবেন :

সবচে ভালো হলো ট্রেনে যাওয়া। প্রতিদিন সকাল ৮.১০ এ এগারসিন্দুর প্রভাতি (বুধবার বন্ধ) ছাড়ে কিশোরগন্জের উদ্দ্যেশ্যে। এতে উঠে কুলিয়ারচর নেমে পরুন। ভাড়া ১১০ টাকা।

এছাড়া গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া থেকে বিআরটিসি বাসে করেও কুলিয়ারচর যাওয়া যায়। ভাড়া ২০০ টাকা। যারা ভৈরব হয়ে যেতে চান তারা ভৈরব নেমে সিএনজিতে করে কুলিয়ারচর যাবেন। শেয়ারে ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪০ টাকা।

কুলিয়ারচর নেমে একটা রিক্সা নিয়ে চলে যান লঞ্চঘাট। এখান থেকে প্রতিদিন সকাল ৬ টা, ৮ টা, ৯ টা, ১১ টা এমনি করে ৩ টা পর্যন্ত লঞ্চ ছেড়ে যায় অষ্টগ্রাম। ভাড়া ১০০ টাকা। সময় লাগবে সাড়ে ৩ ঘন্টা।

আসার সময় বাজিতপুর হয়ে আসতে পারেন। বিআরটিসির এসি বাস পাবেন সারাদিন। ভাড়া ১৮০ টাকা।

কোথায় থাকবেন:

চাইলে জেলা পরিষদ ডাক বাংলো থাকতে পারেন কেয়ারটেকার রন্জন ভাইয়ের সাথে আগে যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখবেন। রান্নার ব্যবস্থাও উনি করবেন। ওনার ফোন নম্বর : ০১৭১-০২৯১২২৫

এছাড়া কিশোরগঞ্জে থাকার জন্য আরো কিছু হোটেল রয়েছেঃ   হোটেল রিভার ভিউ,  হোটেল শাহিনা (আবাসিক), হোটেল গাংচিল (আবাসিক)।

বিঃ দ্রঃ হাওড়ে সন্ধ্যার পর অবস্থান না করাই ভাল।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: ভ্রমণ পাগল,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 3, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.