ঢাকার খুব কাছেই বেড়ানোর জায়গা কিংবা আবকাশ কেন্দ্র যারা খুঁজছেন তাদের জন্য পদ্মার পাড়ের মাওয়া রিসোর্ট(Mawa Resort) হতে পারে প্রথম পছন্দ। রিসোর্ট দেখলেই মনে হবে যেন নিজের ছিমছাম ঘর, অথচ একটু সামনেই প্রমত্তা নদী পদ্মা। ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণে বিক্রমপুরের লৌহজং উপজেলার মাওয়া ১ নম্বর ফেরিঘাট থেকে একটু দক্ষিণে মাওয়া-ভাগ্যকুল রাস্তার কান্দিপাড়া গ্রামে নির্মিত এ রিসোর্টি জেনো প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত একটি অন্য রকম পর্যটন কেন্দ্র।
ইচ্ছেমতো নদীতে সাঁতার কাটা, ভেসে বেড়ানো, নৌকায় চড়া এসব আয়োজনই আছে রিসোর্টের আওতায়।
নির্জন পরিবেশ আর সবুজে ঘেরা চতুর্দিক যেন পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। পর্যটন কেন্দ্রটি প্রধান ফটকে ঢুকতেই নজরে পরে বিশাল এক দীঘি (পুকুর)। দীঘির চারদিকে সারি সারি নারিকেল আর সুপারি গাছ পর্যটকদের হাত ছানি দিয়ে ডাকে তার সৌন্দর্য দেখতে। দীঘিতে রয়েছে দু’টি বাঁধানো পাকা ঘাট। দিঘিতে শিশুদের নিয়ে নিরাপদে জলকেলির সুযোগ রয়েছে, ঘুরে বেড়াতে পারবেন বোটে করেও। দিঘীর পাড়েই ক্যাফেটোরিয়া। সেখানে সার্বক্ষণিক খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
এখানে মোট কটেজ সংখ্যা ১৮টি। ৫ টী সিঙ্গেল, ৪টি ডাবল এবং একটি সুইট রয়েছে। তবে কটেজে যাওয়ার সময় সাদা আর সবুজ রংঙের কাঠের পুলটি পর্যটন কেন্দ্রটির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। পিকনিক ও ছবির শু্যটিং করার জন্যও এটি হতে পারে একটি অনন্য স্থান। রিসোর্টের কটেজগুলো ইটের দেয়ালে তৈরি করা হলেও এতে ছাদ না দিয়ে গ্রামের স্বাদ দিতে গোল পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে চাল। বাঁশের চটা দিয়ে নানান আলপনা দিয়ে তৈরি করা সিলিং পর্যটকদের মন কেড়ে নিবে। ভেতরে আধুনিক আসবাবপত্র, বাথরুম আর টাইলসের মেঝে দেখে মনে হয় এ জেনো কোন ফাইভ স্টার হোটেল। পুরো পরিবেশটাই নান্দনিক। শহরের সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তবে সাথে বজায় আছে গ্রামের আদিমতাও। রাতে ঘরের জানালায় জোনাক পোকার খেলা সেই বার্তাই দেয় যেন।
খরচঃ
রিসোর্টে এমনি ঘুরতে গেলে প্রবেশ মূল্য ৪০ টাকা। দিনের বেলা (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা) পর্যন্ত রুম নিয়ে থাকতে চাইলে নন ইসি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার, এসি ৪ হাজার আর সুইট কটেজ ১২ হাজার টাকা ভাড়া নেবে। রাত্রীযাপনের ক্ষেত্রে খরচ বাড়বে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। পিকিনিক বা পার্টির জন্যেও বুকিং নিতে পারবেন মাওয়া রিসোর্ট।
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন – ০১৭১১৬৭৬০৫৮, ০১৭৫৫৫৯২৫৮৫, ০১৭৫৫৫৯২৫৮৪, ০১৭১১০৫৭৯৪৭
কীভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে মাওয়াগামী বাস যেমন ইলিশ পরিবহন বা গাঙচিলে উঠতে হবে গুলিস্তান থেকে। নামতে হবে লৌহজং থানা মসজিদের সামনে। এছাড়া মিরপুর ১০, ফার্মগেট, শাহবাগ থেকে স্বাধীন পরিবহনে উঠতে পারেন।
অথবা আপনি মাওয়া ঘাট পর্যন্ত যেতে পারেন “গ্রেট বিক্রমপুর পরিবহন” (মাওয়া-গুলিস্থান-মাওয়া) কিংবা “গোধুলী পরিবহনে” (মাওয়া-গাজীপুর/যাত্রাবারি-মাওয়া)। সেক্ষেত্রে মাওয়া ফেরিঘাট যাবার আগেই লৌহজং থানার যাবার পথের চৌরাস্তায় মোড়ে আপনাকে নামতে হবে। পরে রিক্সা অথবা অটোরিক্সাতে ১৫ মিনিটের পথ।
নিজস্ব গাড়িতেও যেতে পারেন। ঢাকা থেকে মাওয়া গোলচত্বরের ডানদিকের রাস্তায় দুই কিমি দূরের লৌহজং পুলিশ ফারির নিকটে পুরনো ফেরী ঘাটের পাশে এটি অবস্থিত। স্থানীয়দের জিজ্ঞেস করলে তারা আপনাকে পথ চিনতে সাহায্য করবে।
বিক্রমপুর সম্পর্কে লেখাটি পড়ে ভাল লাগল। অনেক কিছু অজানা ছিল তাও জানতে পারলাম। ধন্যবাদ লেখককে। তবে বিক্রমপুরে অনেক রিসোর্ট রয়েছে যেখানে মানুষ আনন্দ বিনোদনের জন্য যেতে পারেন সেই সব গুলাও তুলে ধরলে আরও ভাল হতো ।
আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের সাহায্য সহযোগীতা পেলে আশা করছি খুব শীগ্রই দেশের সকল দর্শনীয় স্থান গুলোকে যুক্ত করতে পারব। ইনশাল্লাহ।