ঢাকার প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানের নিকট পল্টনে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদ’(Baitul Mukarram Masjid)। মসজিদের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঢাকায় অধিক মুসল্লি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি বড় মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় তৎকালীন পাকিস্তানের বাওয়ানি পরিবার।
সেই সূত্র ধরে, বাওয়ানি জুট মিলসের মালিক পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তাঁর ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানি মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মুকাররম মসজিদ সোসাইটি’ গঠনের মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মসজিদের নকশা প্রণয়ন করেন সিন্ধুর বিশিষ্ট স্থপতি এ এইচ থারানি। স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয় পুরান ও নতুন ঢাকার মিলনস্থল পল্টনে ৮.৩০ একর জমি। যা পল্টন পুকুর ছিল। ২৭ জানুয়ারি ১৯৬০ সালে পুকুরটি ভরাট করার মধ্য দিয়ে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৬২ সালে ।
৩০ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই মসজিদটির নকশাতে ভিন্নতা আনার জন্য মসজিদটির নকশা মক্কার কাবা ঘরের আদলে চারকোনা আকৃতির করা হয়েছে। অন্যান্য মসজিদের মতো নকশায় সংযোজিত হয়নি কোনো গম্বুজ।
১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ২০০৮ সালে সৌদি সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি সম্প্রসারিত করা হয়।
বর্তমানে বায়তুল মোকাররম মসজিদ আটতলা। নিচতলায় বিপণিবিতান ও গুদামঘর। মসজিদের দোতলা থেকে খতিব নামাজ পড়ান। তবে দোতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় নামাজ পড়া হয়। তিনতলার উত্তর পাশে নারীদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে । উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে মসজিদে প্রবেশ করা যায়।
প্রতি শুক্রবারে দূরদুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে এই মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক বায়তুল মোকাররম মসজিদ দর্শন করতে আসে প্রতিদিন।
কীভাবে যাবেন :
বাসে চড়ে সরাসরি পল্টন, গুলিস্তান অথবা মতিঝিল নেমেই হেঁটে যেতে পারেন বায়তুল মোকাররম মসজিদে।