প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাসাইল উপজেলার অন্যতম একটি সুন্দর স্থান বাসুলিয়া (Basulia) (চাপড়া বিল Chapra Bill)।
বাসাইল বাজার থেকে নলুয়া সড়ক ধরে মাত্র তিন কিলোমিটার পার হলেই বাসুলিয়া । রাস্তার দু’ধারে দিগন্তের নীচে শুধু পানি আর পানি। এখানে আছে বিশাল একটি বিল । যার নাম ‘চাপড়া বিল ।
বর্ষায় টুইটুম্বুর বিলে পরিষ্কার পানি আর পানিতে ভেসে থাকে আকাশের মুখচ্ছবি। অপূর্ব শান্তিময় সবুজের মাঝে নীল বিলে নৌকায় ভেসে বেড়ানোর আনন্দই আলাদা। বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে আপরুপ সৌন্দর্যের হাতছানি দিয়ে ডাকে ভ্রমণ পিপাসুদের। প্রকৃতির সেই অপরুপ সৌন্দর্যে সাড়া দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভীড় জমায় এই টাঙ্গাইলের বাসুলিয়ায়। তারপর নৌকা করে সারাদিন মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ান বিশাল এই বিলে। পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য বিভিন্ন রঙে সাজানো প্রায় শতাধিক নৌকা ঘাটে বাঁধা থাকে। বড় বড় নৌকাতে রয়েছে স্যালো ইঞ্জিন। পর্যটকরা বিনোদনের জন্য সাথে নিয়ে আসেন মাইক ও বাদ্যযন্ত্র। সারাদিন নাচে গানে মুখরিত থাকে এই বিলটি। মূলত বর্ষায় কয়েক কিলোমিটার বিস্তৃত বিশাল জলরাশি ও গ্রাম বাংলার অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
নানান আকৃতির নৌকা পাওয়া যায় এই বিলের ঘাটে। ছোট নৌকাগুলোতে অনায়াসে ৫/৭ জন ওঠা যায়। ভাড়া নেয় ঘন্টা প্রতি ২০০ টাকা। বিশেষ করে যারা খোলা আকাশ, মুক্ত বাতাস আর স্বচ্ছ পানিতে মুগ্ধ হন তাদের জন্য এটা একটা অসাধারণ জায়গা। গ্রুপ করে আসলে অনেক অল্প খরচে খুব সুন্দর একটা বিকেল কাটানো সম্ভব এখানে।
এই বিলে আছে একটি হিজল গাছ । যাবার সময় হাতের ডান দিকে বিলের মাঝখানে এক বিশাল হিজল গাছ । “ গাছটির জন্ম কিন্তু এখানে নয় ”। সেই প্রাচীন যুগে গাছটি এসেছিল ‘আসাম রাজ্য’ থেকে । একদিন জমির মালিক করাত চালায় এই হিজল গাছে। একটু পর দেখতে পায় রক্ত ঝরছে গাছের কাটা যায়গা থেকে। যারা গাছটি কাটতে গিয়েছে তারা রক্ত বমি করতে করতে মারা গিয়েছে।
কিভাবে যাবেন
মহাখালি থেকে টাঙ্গাইলের বাসে করে সোজা চলে যাবেন টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ড। ভাড়া-নন এসি বাসে ১৬০ টাকা আর এসি বাসে ২৫০ এর মতো। এরপর নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোতে করে ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে আসবেন পুরাতন বাসস্ট্যান্ড। সেখানে বাসাইলের সিএনজি পাওয়া যাবে। ভাড়া ৩০/৪০ টাকা।
বাসাইল বাজারে গিয়ে সিএনজি থেকে নেমে ভ্যানে করে বাসুলিয়া বিলের পাড়। ভাড়া প্রতিজন ২০ টাকা করে। দিনে যেয়ে দিনেই ফিরে আসতে পারবেন বাসুলিয়া থেকে। তবে বিলের সবচেয়ে সুন্দর রূপটা দেখতে হলে বিকেল পর্যন্ত থাকতে হবে।