নদ-নদী ও পানিসম্পদ রক্ষায় নীতিনির্ধারকদের আরও উদ্যোগী করে তোলা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত কাছাকাছি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশের প্রথম পানি জাদুঘর(Pani Jadughor)। কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজারসংলগ্ন এলাকার এক দ্বিতল ভবনে এই পানি যাদুঘর। বুয়েটের সহযোগিতায় জাদুঘরের নকশা প্রণয়নসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়েছে। এর নির্মাণের উদ্যোক্তা বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ।
পানি জাদুঘরে এ দেশের নদ-নদীগুলোর নাম-পরিচয়, হারিয়ে যাওয়া নদী ও বর্তমান নদীর ছবি, নদীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত তথ্য জানা যাবে। এখানে রাখা হয়েছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, বুড়িগঙ্গা, আন্ধারমানিকসহ ১০টি নদীর পানির নমুনা। বাংলাদেশের সঙ্গে ৫৭টি আন্তর্জাতিক অভিন্ন নদীর পানির নমুনা রাখার পরিকল্পনা আছে ভবিষ্যতে। এ ছাড়া হাঁড়ি-পাতিল, মাটির তৈরি সামগ্রী আছে জাদুঘরে। একসময় ঘরে ঘরে কাঁসার জিনিসপত্রের যে তৈজসপত্র ছিল তারও দেখা মিলছে এখানে। আছে মাছ ধরার জাল, চাইসহ বিভিন্ন উপকরণও।
পানি জাদুঘরের সামনেই আছে একটি নৌকা। এটি অর্ধেক বালুতে ডোবানো। নদী মরে যাওয়ার গল্পের প্রতীক এটি। এখন নদীপাড়ের মানুষের জীবনও শুকিয়ে যাচ্ছে। বালুতে আটকে যাওয়া এ নৌকার মাধ্যমে তা তুলে ধরা হয়েছে। নৌকার বুকে বিঁধে আছে দুটি গজাল, যা নদীমাতৃক এই দেশকে মেরে ফেলার চেষ্টার প্রতীক।
সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দর্শনার্থী ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০টাকা।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌপথে সরাসরি পটুয়াখালী আসা যায়। সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সাকুরা, ঈগল, সোনারতরী, সুরভী, কনকসহ বিভিন্ন বাস সার্ভিসযোগে পটুয়াখালী পৌঁছাতে জনপ্রতি খরচ হবে ৪০০-৬০০ টাকা। অন্যদিকে সদরঘাট থেকে সুন্দরবন, কাজল, সাত্তার খান, প্রিন্স আওলাদ ও এআর খান লঞ্চযোগে পটুয়াখালী পৌঁছাতে লাগবে ৩০০-১০০০ টাকা। এ ছাড়া আকাশপথে বরিশাল পর্যন্ত আসা যাবে। সেখান থেকে গাড়িযোগে কলাপাড়ার পানি জাদুঘরে পৌঁছাতে খরচ হবে ২০০ টাকার মতো।