নীলাদ্রি লেক – সুনামগঞ্জ

নীল রঙে রূপায়িত ”নীলাদ্রি” । এ যেন নীলের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া । হ্যা নীলাদ্রির কথা বলছি, ভাবছেন এটা আবার কি? এই স্বর্গীয় সৌন্দর্যে ভরা জায়গাটা কাশ্মীর নয় আমাদের দেশেই ! কি অবাক হচ্ছেন ? ছবি দেখে কাশ্মীর ভেবে ভুল করবেন না, একে নীলাদ্রি নামেই চেনে সবাই। এর অপরূপ সৌন্দর্য্যে ডুব দিতে নিশ্চিন্ত মনে ঘুরে আসুন সুনামগঞ্জ থেকে । নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের পাথর কোয়ারি পর্যটকদের কাছে এখন নীলাদ্রি লেক(Niladri Lake) নামে পরিচিত। নীলাদ্রি লেকের অবস্থান ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাটে। প্রতিদিন শত শত পর্যটক ভিড় জমান এ লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

অনেকেই সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওর দেখতে যান। কিন্তুু এর আশেপাশেই অনেক সুন্দর সুন্দর নয়নাভিরাম জায়গা আছে যা যেকোন পর্যটকের মনকে মুহূর্তেই দোলা দিয়ে যেতে পারে ! এমনই একটি যায়গা টেকেরঘাট চুনাপাথরের পরিত্যাক্ত খনির লাইমস্টোন লেক। স্থানীয় লোকজন একে নীলাদ্রি লেক বলেই জানে । এর নামটা যেমন সুন্দর এর রূপটাও তেমনি মোহনীয় । নিজ চোখে না দেখলে হয় বিশ্বাসই করতে পারবেননা পানির রঙ এতটা নীল আর প্রকৃতির এক মায়াবী রুপ। মাঝের টিলা গুলা আর ওপাড়ের পাহাড়ের নিচের অংশটুকু বাংলাদেশ এর শেষ সিমানা। বড় উচু পাহাড়টিতেই সীমানা কাটা তারের বেড়া দেওয়া আছে। এই লেকটি এক সময় চুনা পাথরের কারখানার কাচামাল চুনা পাথরের সাপ্লাই ভান্ডার ছিল যা এখন বিলীন।

কোথায় থাকবেন

বেশকিছু রেস্ট হাউজ এবং গেস্ট হাউজ আছে বড়ছড়া বাজারে । সেখানে আপনি ২০০-৪০০ টাকায় এক রাত থাকতে পারবেন। বারিক্কা টিলা পাড় হয়েই বড়ছড়া বাজারটা চোখে পড়বে । চাইলে টেকেরঘাট থেকে হেঁটেও আসতে পারবেন বড়ছড়া বাজারে, মেঠো পথ ধরে হাঁটতে ভালোই লাগবে । এছাড়াও লেকের পাশে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি চুনা পাথরের কারখানা আছে তার গেস্ট হাউজে থাকতে পারবেন যদি খালি থাকে।

কিভাবে নীলাদ্রি যাবেন

রুট-১:

ঢাকা থেকে শ্যামলী/মামুন/এনা এবং আরো কিছু বাস যায় সুনামগঞ্জে, যেকোন একটাতে উঠে পড়ুন, ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৫৫০ টাকা । সুনামগঞ্জ থেকে নতুন ব্রীজ পার হয়ে মোটর সাইকেল নিয়ে যেতে হবে। চাইলে টেকেরঘাট পর্যন্ত সরাসরি মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা নিতে পারে আর মাঝপথে যাদুকাটা নদী পার হতে জনপ্রতি ভাড়া ৫ টাকা আর মোটর সাইকেল এর ভাড়া ২০ টাকা করে পড়বে ।

এছাড়া আপনি সুনামগঞ্জ থেকে লাউড়ের গড় পযন্ত মোটর সাইকেলে করে যেতে পারেন ভাড়া ২০০ টাকা । তারপর যাদুকাটা নদী পাড় হয়ে বারিক্কা টিলা থেকে ১২০ টাকা ভাড়ায় টেকেরঘাট যেতে পারবেন। এখানে উল্লেখিত মোটর সাইকেল এর ভাড়া যেটা উল্লেখ আছে সেটা পুরা বাইকের ভাড়া মানে একটা বাইকে ২ জন যেতে পারবেন। তবে মোটর সাইকেলের ভাড়া আগে দামাদামি করে নিবেন তাহলে ঠকবেন না, এরা দাম কিছুটা বাড়িয়ে বলে অপরিচিত মুখ দেখলে।

রুট-২:

ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ইন্টারসিটি ট্রেন নাম হাওর এক্সপ্রেস। ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় রাত ১১:০০, ভাড়া ২০০ টাকার মধ্যে, সকালে মোহনগঞ্জ পৌছায়। সেখান থেকে ১ ঘন্টার রাস্তা মধ্যনগর, পিচ ঢালা রাস্তা। সেখান থেকে বর্ষাকালে নৌকা, ট্রলার বা স্পিডবোট দিয়ে খুব সহজে যাওয়া যায় গন্তব্যে। আর নেত্রকোনা থেকেও সরাসরি নৌকা/ট্রলার যোগে যাওয়া যায়। শীত কালে মোটরসাইকেল যোগে খুব সহজে নেত্রকোনা থেকে যাওয়া যায়।
সবথেকে কম খরচে, আরামে, কম সময়ে খুব সহজে পৌছানো যায়।
কেউ যদি নিজস্ব গাড়ি নিয়া যেতে চায় মধ্যনগর (পিপরা কান্দা ঘাট) পযর্ন্ত নিজের গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, মাইক্রোবাস বা কার বা জীপ। রাস্তা খুব সুন্দর।
সর্টকাট রাস্তা ঢাকা থেকে নেত্রকোনা হয়ে বারহাট্টা বা মোহনগঞ্জ দিয়ে টেকেরঘাট।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: ভ্রমণ পাগল,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 27, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.