দেশের পুরাকীর্তি স্থাপনার মধ্যে মানিকগঞ্জের তেওতা জমিদার বাড়ী(Teota Jomidar Bari) ইতিহাস অন্যতম। এর বাড়ির ঐতিহাসিক নির্দর্শন এখন শুধু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীর কূলঘেঁষা সবুজ-শ্যামল গাছপালায় ঢাকা তেওতা গ্রামটিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিয়েছে জমিদার শ্যামশংকর রায়ের প্রতিষ্ঠিত নবরত্ন মঠটি। অনেকদূর থেকেই দেখা যেত শ্বেতশুভ্র নবরত্ন মঠ। এক সময়ে জমিদারের বাড়ির আঙিনার এই মঠকে ঘিরে দোলপূজা আর দুর্গাপূজার রঙিন উৎসব পালিত হতো। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই তেওতা গ্রামটি আরও বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী প্রমীলার স্মৃতি জড়িয়ে থাকায়। তেওতা গ্রামের মেয়ে প্রমীলা।
জমিদারবাড়ী পাশেই বসন্তকুমার সেন আর গিরিবালা সেন দম্পতির মেয়ে আশালতা সেন বা প্রমীলা নজরুল। এর ডাক নাম দুলি। ছন্নছাড়া, ভবঘুরে নজরুল কয়েক দফায় এসেছিলেন এই গ্রামে। তবে এখানে কেন এসেছিলেন এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানান বিতর্ক।
তবে জনশ্রুতি হয়েছে ১৯২২ সালে প্রমীলার সাথে একবার এসেছিলেন এটি প্রায় সবাই সায় দেয়। ঐ বছর সেপ্টেম্বর মাসে নজরুলের লেখা ‘‘আনন্দময়ীর আগমনে’’ কবিতাটি ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশ হলে ব্রিটিশ সরকার তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। প্রমীলাকে নিয়ে তেওতা গ্রামে আত্মগোপন করেন নজরুল।
আত্মগোপনে থাকতে আসলেও দুরন্ত নজরুল অবশ্য ঘরের কোনে বসে থাকেননি। যমুনার ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা সবুজ শ্যামল পাখিডাকা তেওতা গ্রামে ছুটে বেরিয়েছেন। গান, কবিতা আর অট্টহাসিতে পুরো গ্রামের মানুষকে আনন্দে মাতিয়েছেন। কখন ও বা জমিদার বাড়ির শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে রাতের বেলায় করুণ সুরে বাঁশি বাজিয়ে বিমোহিত করেছে রাতজাগা গ্রামের মানুষকে।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে বাসে আরিচা ঘাট এসে নামতে হবে। এরপর সি এন জি অথবা রিক্সা যোগে তেওতা যেতে হবে।এছাড়া নদী পথেও আসা যাবে। এজন্য নৌকায় আরিচাঘাটে এসে নামতে হবে। যমুনা নদী দিয়ে বাংলাদেশের যেকোন পয়েন্টে থেকে তেওতা জমিদারবাড়ী আসা যাবে।