বড় কাটারার পূর্বদিকে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে শায়েস্তা খানের আমলে তৈরি একটি ইমারত ছোট কাটরা(Chota Katra)। আনুমানিক ১৬৬৩ – ১৬৬৪ সালের দিকে এ ইমারতটির নির্মান কাজ শুরু হয় এবং তা ১৬৭১ সালে শেষ হয়েছিল। ইমারতটি দেখতে অনেকটা বড় কাটারার মত হলেও এটি আকৃতিতে বড় কাটারার চেয়ে ছোট এবং এ কারণেই হয়তো এর নাম হয়েছিল ছোট কাটারা। তবে ইংরেজ আমলে এতে বেশ কিছু সংযোজন করা হয়েছিল।
বর্তমানে ছোট কাটারা বলতে কিছুই বাকি নেই শুধু একটি ভাঙা ইমারত ছাড়া। যা শুধু বিশাল তোড়নের মতন সরু গোলির উপর দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে অসংখ্য দোকান এমন ভাবে ঘিরে ধরেছে যে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এখানে মুঘল আমলের এমন একটি স্থাপত্য ছিল।
ইমারতটি দক্ষিণ এশিয়ার ক্যারাভান সরাই-এর নমুনায় নির্মিত ও রাজকীয় মুগল কাটরার অনুরূপ। এতে রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণে দু’টি প্রবেশপথ দক্ষিণের প্রবেশপথ প্রধান। কাটরার জানালার খিলানসমূহ তিনভাঁজ বিশিষ্ট। মিনারগুলি মজবুত এবং অন্যান্য মুগল মিনারের তুলনায় মোটা ও প্যারাপেট-বিহীন। প্রাসাদের সিঁড়ি ও মেঝে কাঠ দিয়ে তৈরী। কাঠের সিঁড়িগুলি ছিল বেশ চওড়া। একতলায় একটি কক্ষকে বিভক্ত করা হয়েছে আড়াআড়িভাবে। একটি লম্বা ও অপরটি চওড়া এ দ’ুভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ভল্টেড কক্ষসমূহের প্রবেশদ্বারে বড় খিলান যুক্ত আছে। ভল্টেড কক্ষসমূহ মাটির নিচে থাকায় তা ঠান্ডা ও অন্ধকার। কক্ষগুলি অলংকরণবিহীন সাদামাটা। খুবসম্ভবত তা তাহখানার কাজ করেছিল। ভল্টসমূহ মুগল স্থাপত্যের নমুনা হিসেবে অতি সুন্দর।
ছোট কাটরা অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও স্থাপত্য ও অলংকরণাদির বৈশিষ্ট্য বিচারে এটি বড় কাটরার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বহুবার সংস্কার করার ফলে প্রবেশপথ দুটির মূল বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন দেখা দিলেও এ দুটি এখনও বর্তমান। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ বেষ্টিত চারপাশের ভবনাদি বহুবার নবায়ন, পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। লআদি ভবনে অনেক আধুনিক সম্প্রসারণ হয়েছে। নদীর দিকে তিনতলা বিশিষ্ট প্রবেশপথে কিছু উপনিবেশিক বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। ত্রয়ী জানালায় ও সুউচ্চ পার্শ্ব বুরুজে পরবর্তী সংস্কারের সময় উপনিবেশিক প্রভাবের প্রতিফলন ঘটেছে।
কীভাবে যাবেনঃ
ছোট কাটরা যেতে হলে আপনাকে প্রথমে গুলিস্তান আসতে হবে। তারপরে সেখান থেকে রিক্সায় করে ছোট কাটরা।
বড় কাটরার প্রায় ১৮৩ মিটার পূর্বে হাকিম হাবিবুর রহমান লেনে ছোট কাটরা অবস্থিত।