পানাম বাংলাদেশের চারশত বছর প্রাচীন বাংলাদেশের নগর ভিত্তীক একটি প্রাচীন নগরীর মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এর প্রাচীনত্ব আরো গভীর হতে পারে। ‘‘পাইনাম’’ ফার্সি শব্দ। পাইনাম থেকে পানাম। অর্থ আশ্রয়। ধারনা করা যেতে পারে ঐতিহাসিক ‘‘সড়কে-ই-আযম’’ গ্রান্ড ট্রাংঙ্ক রোডের সমাপ্তি এ পানাম নগরেই হয়েছিল। সে সুবাদে পানাম নগরী ‘‘সরকার-ই-সোনারগাঁওয়ের’’ পরগনার হেড কোয়ার্টার হিসেবে ও বিবেচিত।
পানামের প্রাচীনত্ব বহন করে ট্রেজারার হাউস, সেতু, কোস্পানীর কুঠি এবং প্রাচীন বনেদি ইমারত সমূহ। সোনারগাঁয়ের নান্দনিক চারু ও কারু শিল্পের জন্যে বিখ্যাত মসলিনের আড়ং ছিল পানাম নগর(Panam Nagar)। পানাম নগরের বিভাশিত বর্নাঢ্য-ইমারত সমূহ স্বাক্ষ্য দেয় একসময় সোনারগাঁয়ের অভিজাত নাগরিকদের বসবাসের কেন্দ্র ছিল। লোকজ শিল্প সমৃদ্ধ নান্দনিক ফুল, লতাপাতা সম্বলিত দেয়াল, চিত্রিত চারুতায় ভরপুর মায়াবি নাচঘরকে কেন্দ্র করে লোকজ গানের আসর বসতো। মায়াবি পর্দা দুলে ওঠার মতো মসলিনের পর্দা ঋতু ভিত্তিক বিভিন্ন পূজো উৎসবে মূখর নগরী আবহমান বাংগালির লোকাচার, জীবনাচার, আবহমান জীবন সংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল ছিল পানাম নগর।
লোকজ উপাদানের মোটিভ সম্বলিত একচালা দোচালা ছনের ঘরের মডেল সম্বলিত ইমারত, বঙ্গীয় ‘‘একচালা দোচালা গৃহায়ন’’ সংস্কৃতির আদল রূপে সুদূঢ় দিল্লীতে সমাদৃত হয়েছিল এ থেকে কী আমরা ধারনা করতে পারিনা প্রাচীন এ সোনারগাঁয়ের ছনে ছাওয়া কুড়ে ঘরের আদলই মোগল শিল্পকলাকে উৎসাহিত করেছিল। এসবেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল সোনারগাঁয়ের পৃথিবীখ্যাত নান্দনিক চারু ও কারুশিল্পর জন্যে।
কিভাবে যাওয়া যায়:
আপনাকে গুলিস্তান থেকে স্বদেশ পরিবহনে উঠতে হবে। নামবেন মোরগাপাড়া চৌরাস্তা, ভাড়া সম্ভাব্য ৪০ টাকা। সময় লাগতে পারে ১ ঘন্টা শুক্রবার ছাড়া অন্যদিন হলে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা হাতে নিয়ে বেরুতে হবে। নেমে দেখবেন অটো দাড়ানো আছে। শেয়ারে পানাম নগর যাবে ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। এছাড়া চৈতি গার্মেন্টস্ এর গলি দিয়েও পানাম নগর যাওয়া যায়।
অথবা গুলিস্তান থেকে চিটাগাং রোডের বাসে করে চিটাগাং রোড যাবেন। সেখান থেকে সিএনজিতে করে যেতে পারেন, সর্বোচ্চ ১২০ টাকা ভাড়া। আবার বাসে করেও যেতে পারেন। বাসে গেলে নামতে হবে পানাম নগর বাসস্ট্যান্ড।
মেঘনা নদী পথে- সোনারগাঁ উপজেলায় বৈদ্যের বাজার লঞ্চঘাট হয়ে রিক্সা/সি.এন.জি যোগে পানাম নগর, সোনারগাঁ।