আলী শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরী (রঃ) বাংলাদেশে আগত একজন সুফি সাধক এবং ইসলাম ধর্মের প্রচারক। তিনি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ-এর সময় আতিয়ার জায়গিরদার ছিলেন। তাঁর সম্মানার্থেই করটীয়ার জমিদার সাইদ খান পন্নী আতিয়া মসজিদ নির্মান করেছেন। বাবা কাশ্মিরীর জন্ম পনেরো শতকে। মৃত্যু ১৬১৩ সাল।১৫৯৮ সালে জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে আলী শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরীকে আতিয়া পরগণা দান করা হয়।
আতিয়া শব্দের অর্থও দান। তিনি দীর্ঘ ১৫০ বছর পরমায়ু লাভ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। তিনি নিজের ব্যয়ের জন্য রাজকোষ থেকে সামান্য কিছু অর্থ গ্রহণ করে অবশিষ্ট অর্থ জনকল্যাণে যেমন : মক্তব, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট তৈরিতে ব্যয় করতেন। তাঁর আমলে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর কাগজ তৈরি হতো আতিয়াতে। শাহন শাহ্ বাবা কাশ্মিরী ১৬১৩ সালে মৃত্যুবরণ করলে আতিয়াতেই তাকে সমাহিত করা হয়। আজও আতিয়াতে তাঁর মাজার আছে। মৃত্যুর পূর্বে বাবা কাশ্মিরী প্রিয়ভক্ত সাঈদ খাঁকে আতিয়া পরগণার শাসনভার অর্পণ করেন এবং তাঁর পরামর্শক্রমে সুবেদার ইসলাম খাঁর সুপারিশে দিল্লির মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গীর ১৬০৮ সালে সাঈদ খাঁকে আতিয়া পরগণা ও বাবা কাশ্মিরীর ভাগিনা শাহজামানকে কাগমারী পরগণার শাসনর্কতা নিয়োগ করেন। এই সাঈদ খাঁ করটিয়া জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা।
বাবা আদম কাশ্মিরী ঠিক কখন এই অঞ্চলে আসেন সেই সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি, ধারণা করা হয় তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের কাশ্মির হতে এতদ্বঞ্চলে আগম করেন। তবে, কারো কারো মতে, তিনি ১৫৯৮ সালে একই সঙ্গে সুলতান আলাউদ্দিন হুসায়েন শাহ কর্তৃক আতিয়ার জায়গিরদার এবং কররানী শাসক সোলাইমান কররানী কর্তৃক ধর্মীয় কাজের ব্যয় নির্বাহের জন্য এক বিশাল এলাকা ওয়াকফ্ হিসেবে লাভ করার ফলে সেই সময়ই এদেশে আসেন।
আতিয়াতে রয়েছে বাবা কাশ্মিরীর মাজার (Adam Kashmiri Mazar)। বাবা কাশ্মিরীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তার মাজারের সন্নিকটে গড়ে তোলা হয়েছে বিখ্যাত আতিয়া মসজিদ।
কিভাবে যাবেনঃ
প্রথমেই আপনাকে টাঙ্গাইল শহরে পৌছাতে হবে। ঢাকার মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন বাস যেমনঃ ঝটিকা সার্ভিস, ধলেশ্বরি সার্ভিস সরাসরি টাঙ্গাইলে চলাচল করে। এসব বাসে যেতে ভাড়া পরবে প্রায় ১২০/- টাকা এবং সময় লাগবে আড়াই থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। আপনাকে টাঙ্গাইলের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে।
এখন পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে ১ মিনিট হেঁটে বেবিস্ট্যান্ডে এসে আপনাকে পাথরাইল বটতলা পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করতে হবে। এতে ভাড়া পরবে প্রায় ১৫/- টাকা এবং সময় লাগবে ১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিট। বট তলা থেকে আবারো সিএনজি অটোরিকশায় করে ১০/- টাকা ভাড়ায় প্রায় ১০ মিনিটে কাশ্মিরীর মাজারের যেতে পারবেন। এছাড়া আপনি ব্যাক্তিগত গাড়িতেও যেতে পারেন অথবা সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে যেতে পারবেন।