তিনাপ সাইতার বা পাইন্দু সাইতার – বান্দরবান

তিনাপ সাইতার বা পাইন্দু সাইতার (Tinap Saitar / Paindu Saitar) যে নামেই ডাকি না’কেন এটি বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত। তিনাপ সাইতার বা পাইন্দু সাইতার অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় হওয়ায় এটি এখনো পর্যটকদের কাছে তেমন পরিচিত হয়ে ওঠেনি। তবে শত কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে যারাই এই ঝর্নার দেখতে গিয়েছেন তারা সবাই এর মোহনীয় সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন।

প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট অন্যান্য পর্যটন স্থান থেকে এই ঝর্নার বৈশিষ্ট্য একটু আলাদা। সব মৌসুমে এই ঝর্ণার স্বচ্ছ জল ঠান্ডা-গরম, যেন সমানে সমান। এপাহাড় থেকে ওপাহাড় হয়ে আঁকা-বাকা পথ বেয়ে প্রায় দেড়শ ফুট উপর থেকে এই ঝর্ণা পতিত হয় পাইন্দু খালে। পাইন্দু খালে এ ঝর্ণার পানি সবসময় স্বচ্ছ থাকে। এই দৃশ্য যেকোন পর্যটককে বিমোহিত করবে। আর এখানে সকাল বেলা সূর্যের আলোয় রংধনুও দেখা মিলে।

তবে এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ ভারসাম্যের বিবেচনায় ‘তিনাপ সাইতার’টি পর্যটন স্থান হিসেবে দেশের ভ্রমণ পিপাসুদের সামনে তুলে ধরতে স্থানীয়দের মধ্যে এখনো মতভিন্নতা রয়েছে।

যেভাবে যাবেনঃ

ঢাকা > বান্দরবান > রুমা বাজার > আরথাহপাড়া > মুন্নমপাড়া > পাইন্দু খাল > তিনাপ সাইতার

অথবা

ঢাকা > বান্দরবান > রোয়াংছড়ি > রনিনপাড়া > দেবছরা পাড়া > পাইন্দু খাল > তিনাপ সাইতার

রুমা সদর থেকে চাঁদের গাড়ি করে দুইটি পথে সহজে যাওয়া যায়। চাঁদের গাড়ি করে ৪৫মিনিট থেকে এক ঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। আরথাহ পাড়ায় নেমেই হাটতে হবে প্রায় ৪০মিনিট। সেখানে পৌছঁলেই সব কষ্টের কথা ভুলে যাবে-অনায়াসে। পাহাড়ি রাস্তা, সবসময় গাড়ি পাওয়া যায়না। এর জন্য আগেভাবে ঠিক করে রাখতে হবে চাঁদের গাড়ি।

রুমা সদর থেকে সরাসরি চাঁদের গাড়ি করে মুননুয়াম পাড়ায় নামবেন। খাল বেয়ে পায়ে হেটে যেতেই ‘আত্লাই তিলি’ গিয়ে পৌঁছবে। এটাতে জঙ্গলী কলা গাছের বা বাঁশের ভেলা করে পার হতে হবে। এসময় স্বচ্ছ পানিতে আপনার চোখে পড়বে বড় বড় চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। আরো চোখে পড়বে যেন ভেলায় ছুটে চলে আসছে মাছ। ভেলা থেকে নেমেই হাটার ২০মিনিটের মধ্যে গিয়ে পৌছঁবেন ‘রোয়ালদংপা সাইতার’ বা ঝর্ণা।

এর উচ্চতাও একশ, দেড়শ ফুটের মতো। উপর থেকে নিচে দেখতে কিছুটা হলেও বুক কেপে উঠে, তবে ভয়ের তেমন কিছুই নেই। এই পাহাড়ি পথ দিয়ে সহজে নামতে পারবেন। পায়ে রূপালী বা ফুজি জুতা থাকলে বেশ হয়।‘রোয়ালদংপা সাইতার’ উপর থেকে নিচে দেখতে যেমন সৌন্দর্য্য, ঠিক তেমনি নিচ থেকেও সেই একই রকম দেখতে পাওয়া পায়।

এখান থেকে সামান্য হাটলে পৌছে যাবেন ‘ঙাথলৌ তিলি’ কুম। এ কুমে আগে অনেক বড় বড় মাছ ছিল। ঝর্ণা ভেদে মাছগুলো এত যে বড় ও তৈলাক্ত ছিল, খেলেই মানুষজন প্রায় সময় মাথা ধরে যেত। এসবের কারণে নামকরণ হয়-‘ঙাথলৌ তিলি’ বা ঙাথলৌ কুম। তারপর ১০মিনিটেই দেখা মিলবে ‘তিনাপ সাইতার’।‘

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: ভ্রমণ পাগল,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: এপ্রিল 21, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.