জঙ্গলবাড়ি দুর্গ (Jangalbari Fort) কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার অধীনে জঙ্গলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত।বর্তমানে দুর্গটি ধ্বংস প্রাপ্ত। জনশ্রুতি অনুযায়ী এগারো সিন্ধু যুদ্ধে মানসিংহের কাছে পরাজিত হওয়ার পর লক্ষন সিং হাজরার কাছ থেকে ঈসা খান দুর্গটি দখল করেন।
সম্ভবত লক্ষন হাজরা ঈসা খান কেউই দুর্গটির মোল নির্মাতা নন। দুর্গ এলাকার বাইরে বিশেষ করে দুর্গের দক্ষিন, পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম অংশে অসংখ্য ইটের টকরা ও মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত নির্দেশনাবলি সম্ভবত প্রাক-মুসলিম আমলে এবং এটি ছিল একটি সমৃদ্ধশালী জনবসতির কেন্দ্র। তবে দুর্গের অভ্যন্তরে বেশ কিছু স্থাপনা ঈসা খানের।
দুর্গের চারিদিকে প্রমান করে যে, এটি ছিল বৃত্তাকার আকৃতির। দক্ষিন, পশ্চিম ওউত্তর দিকে গভীর পরিখা খনন করা এবং পূর্বদিকে নরসুন্ধা নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়। দুর্গ স্থলটিকে এখনও একটি দ্বীব বলে মনে হয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু ইটের টুকরা, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ এবং কয়েকটি নিচু ঢিবি ছারা দুর্গটির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
করিমগঞ্জ উপজেলায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মনোরম জঙ্গলবাড়ি ছিল ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী।
দুর্গ এলাকার বাইরে অসংখ্য ইটের টুকরা ও মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত নিদর্শনাবলি মুসলমানরা আসার আগে দুর্গটি নির্মিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তবে দুর্গের ভেতরে বেশ কিছু স্থাপনা ঈশা খাঁর। তাঁর বাসভবনের ধ্বংসাবশেষ আছে। ছাদ ধসে গেলেও দরবার কক্ষের অনেকটাই টিকে আছে। দরবারসংলগ্ন পান্থশালায় এখনো ১০-১২টি কক্ষের অস্তিত্ব আছে। অন্দরমহলের একাংশ সংস্কার করে ঈশা খাঁর বংশধররা সেখানে বসবাস করে।
দুর্গস্থলটিকে এখনো একটি দ্বীপ বলে মনে হয়। চারদিকের জলরাশি এতটাই গভীর যে শুকনো মৌসুমেও নৌকা ছাড়া পার হওয়া যায় না। কালের বিবর্তনে আজ হারাতে বসেছে জঙ্গলবাড়ির স্মৃতি।
ঈশাখাঁর জঙ্গলবাড়ি দুর্গের একটি দরবার হল সংস্কার করে স্থানীয় প্রশাসন স্থাপন করেছে ‘ঈশাখাঁ স্মৃতি জাদুঘর।’ কিন্তু এখানে কয়েকটি ফটোগ্রাফ, ঈশাখাঁর বংশ তালিকা ছাড়া ঈশাখাঁর স্মৃতি বিজড়িত তেমন কিছুই নেই। এছাড়া কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীতে ঈশাখার কিছু স্মৃতি পাওয়া গেছে।
কিভাবে যাবেনঃ
গুলিস্তান থেকে প্রতি ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের বাস ছাড়ে [ঈঁশাখা সার্ভিস] মহাখালী থেকে [কিশোরগঞ্জ ট্রভেলস, অনন্যা, ডিজিটাল অনন্যা, এগারসিন্দুর, হাওড় বিলাস]। তাছাড়া সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা কমলাপুর রেলষ্টশন থেকে এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসে কিশোরগঞ্জ যাওয়া যায় ছুটির দিনে তিন ঘণ্টায় পেঁছোনো যায় কিশোরগঞ্জ। তারপর সাত কিলোমিটার বাস, অটো রিকশায় চেপে জঙ্গলবাড়ি।
তথ্যসূত্রঃ https://goo.gl/8WpP35
ঈশা খার বংশধরদের তালিকা কি দেয়া যাবে?