আনয়ারা পার্কির চর – চট্টগ্রাম

পারকি সমুদ্র সৈকত- নামটা নিশ্চয়ই অনেকের কাছে কিছুটা অচেনা লাগছে। আবার অনেকেই হয়তো চেনেন জায়গাটি। একটা সময় সমুদ্র সৈকত বলতে শুধু কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বোঝানো হলেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে এই পারকি সমুদ্র সৈকতও(Anwara Parkir Char)। চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র এক থেকে দেড় ঘন্টার পথ দূরত্বে এই সুন্দর সমুদ্র সৈকতটি অবস্থিত। একদিকে ঝাউবনের সবুজের সমারোহ, আরেকদিকে নীলাভ সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশি আপনাকে স্বাগত জানাবে। আর সমুদ্র তীরের মৃদুমন্দ বাতাস আপনার মনকে আনন্দে পরিপূর্ণ করে দেবে নিমেষেই।

একটা সময় এই সমুদ্র সৈকতে যাবার রাস্তাটি খুব উন্নত ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে এখানে ভ্রমণপিপাসুদের আনা-গোনা বেড়ে যাওয়াতে কর্তৃপক্ষ রাস্তাটিকে সংস্কার করে ঝকঝকে করে তুলেছে। এছাড়া জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সমুদ্র সৈকতের সাথেই ঝাউবনের ছায়াতলে গড়ে উঠেছে খাবারের দোকানসহ অনেক দোকান-পাট।

এছাড়া রয়েছে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর জন্য স্পীড-বোট, সমুদ্র তীরেই ঘুড়ে বেরানোর জন্য সী-বাইক আর ঘোড়া। এজন্য অবশ্য আপনাকে নির্দিষ্ট ভাড়া গুনতে হবে ঘন্টাপ্রতি হিসেবে। ঝাউবন ঘেঁষে উত্তর দিক বরাবর হেঁটে গেলে দেখতে পাবেন বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলি নদীর মোহনা।


যেভাবে যাবেনঃ

চট্টগ্রাম শহরের যেকোন স্থান থেকেই বাস অথবা টেম্পুতে করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতু বা তৃতীয় কর্ণফুলি সেতুর কাছে যেতে পারেন। সেখানে গেলেই আপনি বটতলী মহসিন আউলিয়ার মাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, ভুলে যেন বাস কন্ডাক্টরের ‘বৈলতলী” উচ্চারণের সাথে ‘বটতলী’কে গুলিয়ে না ফেলেন। দুটি কিন্তু দুই জায়গা। পারকি বীচে যেতে হলে আপনাকে বটতলী মহসিন আউলিয়া মাজারগামী বাসে উঠতে হবে। প্রাচীন এই মাজারটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত।

বাসে উঠে কন্ডাকটরকে বলতে হবে যেন আপনাকে ‘সেন্টার’ নামক স্থানে নামিয়ে দেয়। জায়গাটির প্রকৃত নাম মালখান বাজার, তবে এটি সেন্টার নামেই পরিচিত। এতটুকু পর্যন্ত আসতে বাসে জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকা করে নিবে। সেন্টারে নেমে বীচে যাবার জন্য সি এন জি পাবেন। রিজার্ভ করলে ১০০-১৫০ টাকাতেই পৌঁছে দেবে পারকি সমুদ্র সৈকত। বিচে যাবার আগে খাবার-দাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সেন্টার বাজার কিংবা কিছুটা দূরেই চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার হাউজিং কলোনী সংলগ্ন বাজার থেকে নিয়ে নিতে পারেন। বীচেও কিছু দোকান-পাট রয়েছে, তবে তাতে সবকিছু না-ও পেতে পারেন। আর চট্টগ্রাম শহর থেকে সি এন জি রিজার্ভ করতে চাইলে সরাসরি পারকি বীচ পর্যন্ত ৪০০-৫০০ টাকা করে নিবে।

আর যে কোন সমস্যার জন্য সমুদ্র সৈকতের কাছেই রাঙ্গাদিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করতে পারেন।

আবাসন সুবিধাঃ
গত কয়েক বছরে প্রচুর পর্যটকের আগমণের কারণে এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে মোটেল। যেটা খুব শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আপাতত এখানে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই পারকি সমুদ্র সৈকতে আসতে হলে সকালের দিকে আসাটাই সবচেয়ে ভাল। সারাদিন থেকে সূর্যাস্ত দেখে একটা সুন্দর স্মৃতি নিয়ে ফিরে আসতে পারবেন।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 13, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.