খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলাস্থ নুনছড়ি মৌজায় অবস্থিত সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ৭০০ ফুট উপরে প্রায় সাড়ে ৫ একর জায়গা জুড়ে বিদ্যমান প্রাকৃতিক হ্রদ মাতাই তুয়ারি বা মাতাই পুখিরি(Matai Pukhiri), বাংলাভাষি ও পর্যটকদের কাছে হ্রদটি দেবতার পুকুর নামে অধিক পরিচিত। পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বিভাবে শুয়ে থাকা এই পবিত্র জলাশয়টি দৈর্ঘ্যে প্রায় দেড় হাজার ফুট এবং প্রস্থে ছয়শত ফুট। এই প্রাকৃতিক জলাশয়টির গভীরতা নিয়ে রয়েছে নানা লোকশ্রুতি। কথিত আছে, রেবতী রঞ্জন নামের জনৈক হিন্দু ভদ্রলোক স্থানীয় লোকদের সাহায্যে বাঁশের ভেলায় চড়ে এই হ্রদের মাঝখানের গভীরতা মাপার চেষ্টা করেন। কিন্তু দড়ি তল পর্যন্ত ঠেকাতে পারেননি। বরং ভেলাসহ ডুবে যায় যায় অবস্থা হওয়াতে একটা ছাগল মানত করে গভীরতা নির্ণয়ের চেষ্টা ত্যাগ করেন। এই প্রাকৃতিক হ্রদকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রচলিত রয়েছে নানা লোককাহিনী। সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রকৃতি পূজারি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির বিশ্বাস অলৌকিক কোন শক্তির প্রভাব রয়েছে বলেই হ্রদটি উঁচু একটি পাহাড়ে সৃষ্টি হয়েছে এবং এই হ্রদের জল কখনও শুকোয় না। অনেকের বিশ্বাস, স্বয়ং জল দেবতা স্থানীয় গ্রামবাসীদের পানির চাহিদা মেটানোর জন্য এই হৃদ সৃষ্টি করেছেন। তাই স্থানীয়দের কাছে এটি আর্শীবাদস্বরূপ।
অবস্থানঃ
এই "মাতাই পুখিরি" (দেবতা পুকুর) খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে মাত্র ৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণে খাগড়াছড়ি মহালছড়ি সড়কের কোল ঘেঁষে অবস্থিত মাইসছড়ি এলাকার নুনছড়ি মৌজার আলুটিলা পর্বত শ্রেণী হতে সৃষ্ট ছোট্ট নদী নুনছড়ি।নুনছড়ি নদীর ক্ষীণ স্রোতের মাঝে রয়েছে প্রকান্ড পাথর। স্বচ্ছ জলস্রোতে স্থির পাথর মোহিত করে, প্রকৃতির অপূর্ব সাজে মুগ্ধতায় শিহরিত হয় মন।