প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান গুলোর অন্যতম মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স (Mirinja Parjatan Complex) সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এ স্থানটিতে পর্যটন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে একটি আকর্ষনীয় টুরিস্ট স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। বান্দরবনের লামায় অবস্থিত মিরিঞ্জা পাহাড় ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় এক হাজার ৬০০ ফুট উঁচু । মাথার ওপর নীল আকাশে মেঘের বিচরন। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা, ঘুরতে ঘুরতে হয়ত আপনি নিজেই ঢুকে যাবেন মেঘের ভেতরে।পাহাড়ের নিচে ঝরনাধারা, চূড়ায় আদিবাসীদের (মুরং, ত্রিপুরাসম্প্রদায়ের) টংঘর, সবুজ গাছপালা।
পর্যটকদের আকর্ষণ করতে মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তে নির্মাণ করা হয়েছে সাড়া জাগানো টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য। তাই লোকমুখে জায়গাটার নাম এখন চালু হয়ে গেছে টাইটানিক পাহাড়। টাইটানিকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মনে পড়বে শত বছর আগের টাইটানিক জাহাজকে নিয়ে তৈরি কাহিনিচিত্র। এখান থেকে দেখা যায় সূর্যাস্তের দৃশ্য, অনেক সময় যা কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে সূর্য ডোবার দৃশ্যকেও ম্লান করে দেয়।
কমপ্লেক্সে পর্যটকদের সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সুরম্য গিরিদ্বার ও রেস্ট হাউস-কাম ওয়েটিং শেড বনরত্না। আপনজনকে নিয়ে নির্জনে বসে গল্প করার জন্য আছে দুই স্তরের গোলঘর মালঞ্চ। আছে টেলিস্কোপ ঘর ও প্ল্যাটফর্ম। জোছনারাতে চাঁদ দেখা যাবে গোলঘর থেকে।
শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে মিনি শিশুপার্ক। খাওয়াদাওয়া করা যাবে শিশুপার্ক সংলগ্ন অত্যাধুনিক রেস্তোরাঁয়। পূর্ব দিকের জোড়া সবুজ পাহাড় থেকে শোনা যায় প্রায় এক হাজার ফুট গভীর ঝিরি থেকে জল সিঞ্চনের বিরামহীন কলতান। ভ্রমণের সময় দেখা মেলে বনমোরগ, খরগোশ কিংবা মায়াবী বুনো হরিণের ছোটাছুটি।
দিনের প্রথম ভাগে এলে এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স ঘুরে যে কেউ চাইলেই চলে যেতে পারেন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক অথবা কক্সবাজারে। আর চাইলেই দিনভর থেকে সন্ধ্যায় ফিরতে পরেন লামা বাজারে। এখান থেকে লামা বাজারে যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট।
কোথায় থাকবেন:
লামা উপজেলার লামা বাজারে আছে বেশ কিছু উন্নতমানের হোটেল। সহজেই রাতে থেকে যেতে পারবেন লামায়।
কীভাবে আসবেন:
চট্টগাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া বাস স্টেশনে নেমে বাস, জিপ, মাইক্রোবাস কিংবা অটো রিকশায় করে ২০ মিনিটে আসা যায় লামার মিরিঞ্জা বা টাইটানিক পাহাড়ে।
অথবা, অন্য কোন ভাবে লামা বাজার এসে এখানে আসতে সময় লাগবে ১০ মিনিট।