বান্দরবান জেলার মারায়ন তং (Marayan Tong) অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ভ্রমনপিপাসুদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। কেউ কেউ এই পাহাড়কে মারায়ন ডং (Marayan Dong) নামেও ডেকে থাকে। প্রায় ১৬৪০ ফুট উচ্চতার এই পাহাড় আরও কয়েকটি নামে পরিচিত যেমন- মারায়ান তং, মারায়ং তং, মেরাই থং জাদি, মারাইং ডং ইত্যাদি।
বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার মিরিঞ্জা রেঞ্জে অবস্থিত একটি পাহাড়ের চূড়ায় আছে একটি বৌদ্ধ উপাসনালয়। একটি ছোট বটগাছসহ আরো দুটি গাছ। চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা। এতে আছে বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি। খোলা প্রকৃতির মাঝে বৌদ্ধের বিশাল মূর্তি এই জায়গাটিকে আরও গাম্ভির্যময় করে তোলেছে। দিগন্তজোড়া পাহাড় আর নিচে দক্ষিণ দিকে সাপের মতো বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী, ফসলের ক্ষেত সবকিছু মিলিয়ে এ যেন এক কল্পনার রাজ্য।
ত্রিপুরা, মারমা, মুরং সহ বেশিকিছু আদিবাসীর বসবাস এই মারায়ন তং পাহাড়ে। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে থাকা আদিবাসী পাড়াগুলো বিশেষ বৈচিত্রতা যুক্ত করেছে আলীকদমের এই পাহাড়ি সৌন্দর্যে। পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবনযাত্রা এবং নিখাদ প্রকৃতি দুচোখ ভরিয়ে দেয় এখানে আগত পর্যটকদের।
চূড়ায় উঠতে হবে সর্বমোট ৫টি ট্রেইল, যার মধ্যে সবচেয়ে খাড়া ট্রেইলটা ৭২ ডিগ্রি কোণে ভূমি থেকে চূড়ার দিকে চলে গিয়েছে। তবুও যত ওপরে উঠবেন, চারপাশ আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে।
মারায়ন তং ভ্রমনের জন্য বিশেষ টিপস
- যাত্রাপথে প্রচুর পরিমাণে পানি, গ্লুকোজ, স্যালাইন, শুকনো খাবার, ফ্রাস্ট এইড বক্স, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সঙ্গে নেবেন।
- রান্না করতে চাইলে প্রয়োজনীয় উপকরণ, ম্যাচ ও জ্বালানিও নিয়ে নেবেন। আগুন জ্বালাতে শুকনো কাঠের অভাব হবে না।
- রাতে ক্যাম্পিং করতে চাইলে সঙ্গে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, হালকা চাদর নিয়ে নেবেন। কেননা গরমের মৌসুমেও রাতে খানিকটা ঠাণ্ডা পড়ে পাহাড়ে।
- পাহাড়ে ওঠার আগে সমতলেই স্থানীয় প্রশাসনের কাউকে পেলে নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়ে রাখবেন। তাঁদের কোনো পরামর্শ থাকলে সেগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুনু। আর পাহাড়ে ওঠা কিংবা ক্যাম্পিং করতে চাইলে পথিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পাড়ার হেডম্যানদের জানিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে তাঁদের কাছ থেকে ফোন নম্বর চেয়ে নেবেন। পরে সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাঁদের জানাতে পারেন।
- পাড়ার আশপাশে চলতি পথে পাহাড়িদের কোনো ফল বা ফুলের গাছ থেকে অনুমতি ছাড়া কিছু পাড়তে বা ছিঁড়বেন না। দরকার হলে কিনে নেবেন। সস্তাতেই তা পাওয়া যাবে।
- পাহাড়িদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।
- পাহাড়ে রান্নাবান্না করলে অবশ্যই তা সাবধানে করবেন। যাতে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে না পড়ে।
- চিপস, বিস্কুট, আচার কিংবা অন্যান্য ড্রাই ফুডের প্যাকেট অবশ্যই সংগ্রহ করে নিচে নিয়ে আসবে।
যেভাবে যাবেন :
- ঢাকা থেকে বাসে করে চকরিয়া। (ভাড়া ৭৫০)
- চকরিয়া থেকে চান্দের গাড়ি বা জীপে করে আবাসিক (আলিকদম)।
- আবাসিক থেকেই মারায়ন তং এ উঠতে হবে।
- পরেরদিন সকালে আবার জীপ বা চান্দের গাড়ি করে আদুপাড়া।
- আদুপাড়া থেকে ট্র্যাক করে দামতুয়া/তুক অ ঝর্না।
- ট্রেক শেষে আবার আলিকদম।
- আলিকদম থেকে চকরিয়া।
- চকরিয়া থেকে ঢাকা।
খুবই সুন্দর করে বিষয় গুলো বর্ণনা করেছেন এই পোস্ট এর মাধ্যমে। এই পোস্ট পড়ার পর অনেক বিসয় জানতে পেরেছি খুবি উপকারি পোস্ট ।সহজ ও সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করেছান। আমার অনেক ভাল লেগেছে।