ছয়শ’ বছরের পুরনো শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষারের দিগম্বরীর সন্যাসীবাড়ি ও দিগম্বরী দীঘিটি(Mahisarer Digambari Dighi) বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান ও বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত।
মোগল আমলের স্বাধীন ১২ ভূঁইয়ার একজন বিক্রমপুর পরগনার জমিদার রাজা চাঁদ রায় দিগম্বরীর সন্যাসীর অনুরোধে ১০ একর জমির ওপর এই দীঘি খনন করেন। ২৩ একর ৮৫ শতাংশ জমির ওপর রয়েছে দিগম্বরীর পৈতৃক বাড়িসহ মেলা চত্বর, জোড়াপুকুর, মনসা মন্দির, কালী মন্দির চত্বর ও লক্ষ্মীন্দরের ঘরসহ অসংখ্য স্থাপনা। তাই ইতিহাসের অমর সাক্ষী দিগম্বরীর দীঘি ও এর আশপাশের এলাকাকে ঘিরে শরীয়তপুরের মহিষার হতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, যুগযুগ ধরে এখানে সপ্তাহে দু’দিন শনি ও মঙ্গলবার হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ পূজা ও মেলা হয়। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী এ মেলায় সমবেত হয়ে থাকে। প্রতি বছর শীতের সময় দর্শনার্থীদের পাশাপাশি দেখা মেলে হাজার হাজার অতিথি পাখির। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা বিভিন্ন মানত নিয়ে এখানে আসেন। তাদের বিশ্বাস, দীঘির জলে স্নান করলে সব পাপ ও রোগমুক্তি ঘটে।
দিগম্বরী সেবা সংসদের সভাপতি জগদীশ মাস্টার জানান, ১৯৮২ সালে অর্ধশতাধিক সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করে ৬০০ বছরের পুরনো দীঘিটি পুনর্খনন করা হয়। খননের সময় বেশ কিছু দুর্লভ মূর্তি ও প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে ৪২ কেজি ওজনের একটি কষ্টি পাথরের মূর্তি। ঐতিহাসিক এ স্থানটি সংরক্ষণে সরকারি ও বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, সরকারিভাবে পর্যটন করপোরেশনে অধীগ্রহণের মাধ্যমে ঐতিহাসিক এই স্থানটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হলে শরীয়তপুরের মহিষার হতে পারে প্রত্নতাত্তি্বক গবেষণা ও পর্যটনের আদর্শ স্থান।
কিভাবে যাবেনঃ
বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান ও বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত এ মহিষারের দিগম্বরী দীঘি শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষারের দিগম্বরীর সন্যাসীবাড়ি ও দিগম্বরী দীঘিটি অবস্থািত।