রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার এক নিভৃত পল্লী নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রাম। কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের সমাধিস্থলকে ঘিরে এ গ্রামটি এখন অনেকেরই চেনা।
মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়ার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করলেও তার জীবনের প্রায় পুরো সময় অতিবাহিত হয়েছে পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে। এখানেই মীর মশাররফ হোসেন তার জীবনের উল্লেখযোগ্য কাব্য, উপাখ্যান, উপন্যাস, নাটক, আত্মজীবনী, অনুবাদ ও প্রবন্ধ রচনা করেন।
১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পদমদীতে মৃত্যুবরণের পর এখানেই তাকে সমাহিত করা হয়।
মীর মশারফ হোসেনের স্মৃতি রক্ষার্থে ২০০১ সালে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র (Mir Mosharraf Hossain Memorial Museum) ২০০৫ সালে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়। মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রে আছে সংগ্রহশালা, ১০০ আসন বিশিষ্ট সেমিনার কক্ষ, দফতর, গ্রন্থাগার, অতিথি কক্ষ, অভ্যর্থনা কক্ষ, ডাইনিং, কিচেন এবং প্রসাধন কক্ষ। বর্তমানে এই স্মৃতিকেন্দ্রটিতে অসংখ্য দর্শনার্থী ভ্রমণ করতে আসেন।
শুক্র ও শনিবার সহ সকল ধরণের সরকারি ছুটির দিনে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্র দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার গাবতলি থেকে রাবেয়া, রাজবাড়ী পরিবহণ, সপ্তবর্ণা, সাউদিয়া বাসে চড়ে রাজবাড়ী যেতে জনপ্রতি ২৫০ টাকা ভাড়া লাগে। এছাড়া খরচ কমাতে চাইলে বিআরটিসি বাসে ১০০ টাকায় পাটুরিয়া এসে ২৫ টাকা ভাড়ায় লঞ্চে নদী পেরিয়ে আবার ৩০ টাকা বাস ভাড়ায় রাজবাড়ী শহর পৌঁছাতে পারবেন। রাজবাড়ী জেলায় এসে অটোরিকশা রিজার্ভ করে সরাসরি মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র যেতে পারবেন।
এছাড়া বাস বা অটোরিকশা করে রাজবাড়ীর-কুষ্টিয়া রোডের কালুখালী উপজেলাস্থ মহিমশাহী বাজারে এসে পৃথক আরেকটি অটোরিকশা নিয়ে স্মৃতিকেন্দ্রে যাওয়া যায়।