বিরল কারুকার্য খচিত কর্মকুশলতার অনন্য নিদর্শন হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ (Hajigonj Boro Masjid / Mosque)। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ মসজিদগুলোর অন্যতম, জুমাতুল বিদার বৃহত্তম জামাতের মসজিদ হিসেবে খ্যাত, রহমত ও কারামতপূর্ণ চাঁদপুর জেলাধীন হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ।
বর্তমানে সর্বমোট ২৮,৪০৫ বর্গফুট আয়তনের এই বিশাল মসজিদটির রয়েছে ১৮৮ ফুট উচ্চতার একটি মিনার। মিনারের চুড়ায় উঠার জন্য রয়েছে সিঁড়ি। অসংখ্য ভক্ত মুসুলস্নী উক্ত মিনারের চুড়ায় আরোহন করে থাকেন। বর্তমানে মসজিদটিতে হাজার হাজার মুসুলস্নী তাদের প্রার্থণার কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকেন।
বাংলা একাদশ শতকের কাছাকাছি সময়ে মকিম উদ্দিন (রঃ) নামে এক বুজুর্গ অলিয়ে কামেল ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র আরব ভূমি হতে সপরিবারে চাঁদপুরের বর্তমান হাজীগঞ্জ অঞ্চলে আসেন। ইসলাম ধর্মের আবাদে তাঁর নামানুসারে এলাকাটির নামকরণ হয় মকিমাবাদ। তাঁরই বংশের শেষ পুরুষ হাজী মনিরুদ্দিন (মনাই হাজী) (রঃ) কর্তৃক সুন্নাতে রাসূল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত দোকান হতে হাজী দোকান, তা থেকে হাজীর বাজার এবং পরবর্তীকালে আজকের হাজীগঞ্জ গড়ে ওঠে। মনাই হাজী (রঃ)-এর প্রপৌত্র হাজী আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রঃ) হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়াকীফ।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদটি একচালা খড়ের এবাদতখানা থেকে খড়ের দোচালা ও তারপর দোচালা টিনের মসজিদ। পর্যায়ক্রমে ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশ্বিন হযরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রঃ)-এর পবিত্র হাতে পাকা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানো হয়। কাজ সমাপ্তির পর মর্মর পাথরের মূল মসজিদটিতে বাংলা ১৩৪৪ সনের ১০ অগ্রহায়ণ প্রথম জুমার নামাজের আযান দেয়া হয়। উক্ত জুমার নামাজে উপস্থিত হন অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী একেএম ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, নওয়াব মোশারফ হোসেন ও নওয়াবজাদা খাজা নসরুল্লাহ্সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উক্ত দিবসে নামাজের ইমামতি করেন পীরে কামেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবুল বাশার জৈনপুরী (রঃ)।
কিভাবে যাবেন:
চট্রগ্রাম, ঢাকা, কুমিল্লা, মহাসড়ক পথে বাস ও চাঁদপুর জেলা সদর থেকে বাস/ সিএনজি যোগে চাঁদপুর – কুমিল্লা মহা-সড়কের পার্শ্বে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে যাওয়া যায়।