মৌলভীবাজার জেলা শহরের উপকণ্ঠে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণ পাশে পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলা আর দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজির সমারোহ ও দৃষ্টিনন্দন ইট-সুরকির ফটক-প্রাচীরবেষ্টিত বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক (Barshojora Eco Park)। ছোটবড় বেশকিছু টিলা ঘেরা চিরহরিৎ পত্রঝরা প্রকৃতির এ বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯১৬ সালে। এর পুরনো নাম লাউডগা রিজার্ভ ফরেস্ট (Laudaga Reserve Forest)। যা ২০০৬ সালে বনবিভাগ এ বনের প্রায় ৮৮৭ একর বনাঞ্চল ও আশপাশের এলাকাকে ইকোপার্ক হিসেবে ঘোষণা করে।
নানান গাছপালা আর বন্যপ্রাণীতে সমৃদ্ধ বর্ষিজোড়া জঙ্গল। বনের প্রধান উদ্ভিদ শাল আর গর্জন। আরও আছে সেগুন, লোহাকাঠ, জারুল, তেলশুর, চিকরাশি ইত্যাদি। এছাড়া আগর, আমলকি, বহেরাসহ নানান ঔষধি গাছও আছে। এখানে বসবাস করে হরেক প্রজাতির জীবজন্তু, সাপ, পাখি। বনের ফল-ফলাদি খেয়ে তারা জীবন ধারণ করে।
এখানে বসবাস করা জীবজন্তু, পাখির মধ্যে রয়েছে বানর, শূকর, বেজি, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ, গন্ধগোকুল, ময়না, টিয়া, শালিক, ভিমরাজ, ঘুঘু, ইন্ডিয়ান নাইট হিরণ, প্যাঁচা, লক্ষ্মীপ্যাঁচা, মেছোপ্যাঁচা, তক্ষক, ঈগল, চিল, বাজপাখি ইত্যাদি।
এ ছাড়া সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর মধ্যে রয়েছে গোখরা, দাড়াস, ডোরা, লাউডগা, দ্বিমাতা ও ঘরগিনি্ন সাপ।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক পথে মৌলভীবাজার সদরে যাওয়া যায়। ফকিরাপুল, সায়দাবাদ থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সিলেট এক্সপ্রেস ইত্যাদি বাস যায় মৌলভী বাজার। ভাড়া নন এসি বাসে সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা।
মৌলভীবাজার শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বর্ষিজোড়া বনাঞ্চল। শহর থেকে অটোরিকশা কিংবা রিকশায় যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
মৌলভীবাজার শহরের কাছে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা। মৌলভীবাজারের গিয়াসনগরের শ্রীমঙ্গল রোডে অবস্থিত এ রিসোর্টে পাবেন আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। যোগাযোগ: ০১৬১৭০০৫৫১১।
এছাড়া মৌলভীবাজার জেলা শহরে সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। শ্রীমঙ্গল রোডে হোটেল সোনাগাঁও, শহরের কুসুমবাগে হোটেল শেরাটন প্লাজা, সাইফুর রহমান রোডে হোটেল হেলাল। এসব হোটেলে প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে।