ফেনী নদী – ফেনী

ফেনী নদী (ইংরেজি: Feni River) বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। এর দৈর্ঘ্য ১১৫.৮৫ কিমি এবং উৎসস্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত পর্বত শ্রেণি। উত্তর অক্ষাংশ ও পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে।

ফেনী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত পর্বত শ্রেণিতে ২৩°২০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°৪৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে উৎপন্ন হয়ে ফেনী নদী রামগড় পর্যন্ত দক্ষিণ পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা রাজ্য ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে সীমান্তরেখা এঁকে দিয়েছে। পরে পশ্চিম দিকে আলীগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের মধ্যকার সীমানা রচনা করেছে। এরপর পাহাড়ি নিবাস ত্যাগ করে নোয়াখালী জেলা থেকে চট্টগ্রামকে বিভক্তকারী এই নদী সমভূমি ধরে প্রবাহিত হয়ে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাতে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে সীমানা চিহ্নিতকারী ফেনী নদী বাংলাদেশের অন্তর্গত। কিন্তু ১৯৬০ সাল থেকে ভারত সরকার নদীটির মধ্যভাগ পর্যন্ত নিজেদের দাবি করে আসছে। উৎসমূল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এটির দৈর্ঘ্য ১১৫.৮৫ কিমি। বঙ্গোপসাগর থেকে রামগড় পর্যন্ত ৮০.৪৫ কিমি অংশ সারা বছর ছোট নৌকা চলাচলের উপযোগী। বর্ষাকালে নদীটি কানায় কানায় ভরে ওঠে এবং ভারি বর্ষণের পর প্রবল স্রোত আর ঘূর্ণিপাকে ফেনী নদীর প্রতিটি বাঁক প্রমত্ত ও উত্তাল হয়ে ওঠে। নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদী, যা ছোট ফেনী নদী নামেও পরিচিত, ফেনী নদীর মোহনায় এসে মিলিত হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম জেলা থেকে কোন উপনদী এটির সঙ্গে এসে মিলিত হয়নি। পাহাড়ি ঢাল থেকে যথেচ্ছভাবে গাছপালা কেটে নেওয়ায় পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক ধস ও ভাঙনের কারণে নদীটি ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে আসছে এবং পাহাড়ি ঢল জনিত বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশকে ভাঁওতা দিয়ে এতদিন ফেনী নদীকে ভারত নিজেদের নদী বলে দাবি করে এসেছে। সেভাবে ফেনী নদী থেকে তারা সুযোগ গ্রহণ করে আসছে। আসলে ঘন বন বেষ্টিত পাহাড়ি অঞ্চলে ফেনী নদীর উত্পত্তিস্থল হওয়ায় এর আসল অবস্থান এতদিন অজ্ঞাত ছিল। কিছুদিন আগে ভূগোলবিদ প্রকৌশলী, জরিপ বিষয়ে অভিজ্ঞ লোক এর উত্পত্তি স্থান খুঁজে বের করার জন্য ওই দুর্গম অঞ্চল সফর করেন। তারা ফেনী নদীর উত্সস্থান খুঁজে বলেন যে, বাংলাদেশের অন্যতম ও এ সময়ের বহুল আলোচিত ফেনী নদীর উত্পত্তি বাংলাদেশে। ভারত এতদিন অযথা নদীটির উত্পত্তিস্থল তাদের দেশে বলে দাবি করে এসেছিল। দীর্ঘ সময় ধরে নদীর মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রকল্প থেকে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার আচালং এলাকার ভগবান টিলা পর্যন্ত অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বলা হতো ফেনী নদী আন্তর্জাতিক। বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভক্তকারী এই নদীর উত্পত্তি ত্রিপুরা রাজ্যে। অথচ অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয় এটা পুরোপুরি বাংলাদেশের নদী। নদীর ১০৮ কিলোমিটারের কোনো অংশই ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেনি।
সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, মিরসরাইয়ের আমলীঘাট সীমান্ত এলাকায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে নদীর পাড়ে ব্লক তৈরি করছে ভারত। এ সীমান্তে পাইপ বসিয়ে ভারতের উপেন্দ্রনগরের জন্য পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। রামগড়ের অদূরে সাবরুম শহরের পানি সঙ্কট মেটাতে ১৭টি পাইপ বসিয়ে অনবরত পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। এছাড়া আচালং মৌজায় ১ হাজার ৭০০ একর জমি ভারত বেদখল করে রেখেছে।

প্রবাহপথঃ

ফেনী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত পর্বত শ্রেণিতে ২৩°২০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°৪৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে উৎপন্ন হয়ে রামগড় পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা রাজ্য ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে সীমান্তরেখা এঁকে দিয়েছে। পরবর্তীতে পশ্চিমে আলীগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের মধ্যকার সীমান্ত তৈরি করেছে। পাহাড়ি নিবাস ত্যাগ করে ফেনী জেলা থেকে চট্টগ্রামকে বিভক্তকারী এই নদী সমভূমি ধরে প্রবাহিত হয়ে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

অবস্থানঃ

ফেনী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত পর্বত শ্রেণিতে ২৩°২০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°৪৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে উৎপন্ন হয়ে ফেনী নদী রামগড় পর্যন্ত দক্ষিণ পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা রাজ্য ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে সীমান্তরেখা এঁকে দিয়েছে। পরে পশ্চিম দিকে আলীগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের মধ্যকার সীমানা রচনা করেছে। এরপর পাহাড়ি নিবাস ত্যাগ করে নোয়াখালী জেলা থেকে চট্টগ্রামকে বিভক্তকারী এই নদী সমভূমি ধরে প্রবাহিত হয়ে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাতে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে

 

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 19, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.