পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুঠির(Panchari Shantipur Oronno Cothi)- দক্ষিন এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বুদ্ধ মূর্তি অবস্থিত যেখানে। ভিত্তিসহ গৌতম বুদ্ধের মূর্তির উচ্চতা ৫০ ফিট, যা প্রায় পাঁচ তলা বাড়ির সমান। আগেই মাহেন্দ্র ঠিক করা ছিল। সিএনজি সদৃশ এই পেট্রোলচালিত যানগুলো বেশ বড় ও শক্তিশালি ইঞ্জিনবিশিষ্ট, ছয় জন অনায়াসে ধরে যায়। আমরা মাহেন্দ্রতে চড়ে পানছড়ি এসে পৌঁছলাম। জুতো আর টুপি খুলে মন্দিরে প্রবেশ করলাম। গৌতম বুদ্ধের বিশাল মূর্তি দেখে অবাক হলাম।
প্রকৃতির অবারিত ঘন সবুজ বনানীর ছায়া সুনিবির মমতায় ঘেরা এক অপূর্ব সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি, ধ্যান-সাধনার পীঠস্থান, পূন্যময় তীর্থক্ষেত্র শান্তিপুর অরন্য কুটির। পানছড়ি উপজেলা শহর থেকে সোজা দক্ষিন দিকে প্রায় ৫/৬ কি.মি দূরে শান্তিপুর নামক জনপদের অনতিদূরে এর অবস্থান। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য্য তার অকৃপন দানে সবকিছু উজার করে যেন মেলে দিয়েছে এখানে । বিদাতা যেন স্বয়ং চিত্রকর সেজে মন-প্রাণ ঢেলে, শৈল্পিক রুপ-রঙ দিয়ে আর মন মাতানো সৌন্দর্য্যের রঙ তুলিতে সাজিয়ে দিয়েছে এই পূন্যময় তীর্থক্ষেত্রের প্রতিটি পরত।শুধু রুপ মাধুর্য্যে নয় শান্তিপুর অরন্য কুটির সমগ্র বাংলাদেশী বৌদ্ধ সমাজের তথা বিভিন্ন ধর্ম্মাবলম্বী জনগোষ্টির ধর্ম্মীয় অনুভূতির আকাশে সদা দেদীপ্যমান এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ। বিশেষ করে পানছড়ি এলাকায় বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্ম্মাবলম্বীদরে কাছে একটি স্মরনীয় বছর । ঐ বৎসরেই আমাদের পরমারাধ্য ধর্ম্মগুরু পরমপূজ্য শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির মহোদয়ের অন্যতম শিষ্য শ্রীমৎ শাসন রক্ষিত স্থবির মহোদয় বর্তমান শান্তিপুর অরন্য কুটির এলাকার গহীন অরন্যে এসে ধ্যান সাধনায় নিরত হন। তিনি সম্পূর্ণ প্রকৃতির উপর নির্ভর করে খোলা আকাশের নিচে অরক্ষিত অবস্থায় ধ্যান সাধনা চালিয়ে যান। শান্তিপুর নিবাসী কয়েকজন ধর্ম্মপ্র্রাণ দায়ক-দায়িকা চিন্তা করলেন , এভাবে চলতে থাকলে শ্রদ্ধেয় ভান্তের ধ্যান সাধনার ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।তাই তারা শ্রদ্ধেয় ভান্তের ভাবনার সুবিধার্থে একটি পর্ণ কুটির নির্মাণ করে দিয়েছিলেন ।সেই থেকে শুরু।অক্লান্ত তপস্যা ও অদম্য ধ্যান- সাধনার বলে তিনি অচিরে বৌদ্ধ সমাজের কাছে পরিচিতি লাভ করলেন মহাসাধক হিসাবে।অন্ধকার খেকে আলোতে ফিরে আসলো পানছড়ি বৌদ্ধ সমাজ পরিবেশ । শুরু হল কর্ম চাঞ্চল্য । পরমারাধ্য ধর্ম্মগুরু শ্রীমৎ শাসন রক্ষিত স্থবির মহোদয়ের সঠিক দিক নির্দেশনায় পানছড়ি এলাকায় বৌদ্ধ সমাজ ঝাপিয়ে পড়লো কুটির উন্নয়ন তথা ধর্ম্ম চর্চার মহান ব্রতে। গঠিত হল কুটির উন্নয়ন কমিটি। শান্তিপুর অরন্য কুটিরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থাপনগুলো মধ্যে সাড়ে ৪৮ ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তি, ৪০ হাত দৈর্ঘ্যের দেশনাঘর, ৮০ হাত দৈর্ঘ্যের ভোজনালয় ,সুদৃশ্য ভিক্ষুশালা , সুদৃশ্য শ্রামনশালা , মৈত্রী ভবন , হাসপাতাল অন্যতম। এখানে ২৫ টিরও অধিক কুটির রয়েছে । এছাড়া উপকুটিরও রয়েছে। এখানে দুটি কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি করা হয়েছে । বন ও পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রায় ৩৫ হাজার বৃক্ষ রোপন করে বাগান সৃষ্টি করা হয়েছে।শান্তিপুর অরন্য কুটির এলাকার প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য যে কোন তীর্থযাত্রী বা পর্য়টকদের মন
অবস্থানঃ
পানছড়ি উপজেলা শহর থেকে সোজা দক্ষিন দিকে প্রায় ৫/৬ কি.মি দূরে শান্তিপুর নামক জনপদের অনতিদূরে এর অবস্থান।