বিশাল বিস্তৃত চর প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য নিয়ে গড়ে উঠেছে পদ্মা রিসোর্ট(Padma Resort)। ঢাকা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার লোহজং থানার সামনে নদীর পাড়ে দাঁড়ালেই দেখতে পাবেন মনোমুগ্ধকর পদ্মা রিসোর্ট। ঢাকা থেকে যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের মতো।
নদীর পাড়ে ২-৩টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা অথবা সবসময় স্পিডবোর্ট থাকে। এগুলো আপনাকে পৌঁছে দিবে ওপারে পদ্মা রিসোর্ট। রিসোর্টে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনি বুকিং দিয়ে কনফার্ম করে যাবেন।
পদ্মা রিসোর্টের চৌকস কর্মীরা আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার বুকিং রুমে। রুমে ঢুকেই নিচ তলায় দেখতে পাবেন এক সেট সোফা ও টেবিল সজ্জিত লিভিং রুম। দেড় তলায় অত্যাধুনিক ফিটিংসহ (কমোড, বেসিন, লুকিং গ্লাস, টেলিফোন, শাওয়ার) ইত্যাদি দিয়ে তৈরি বাথরুম। দ্বিতীয় তলায় উঠে দেখবেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ২টি সু-সজ্জিত সিঙ্গেল বেড।
রিসোর্টটি চারিদিকে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ার সার্বক্ষণিক মৃদুমন্দ ঠান্ডা বাতাস বিরাজ করে যাতে করে আপনার এসির কথা হয়তো মনেই হবে না।
রুমে উঠেই হাত মুখ ধুয়ে খাওয়ার কথা মনে হতে পারে। চিন্তা নেই, পদ্মা রিসোর্টের সু-সজ্জিত রেস্টুরেন্ট যা ২০টি টেবিল চেয়ার দিয়ে সাজানো সেখানে আপনি ২০০ জন লোক নিয়ে লাঞ্চ বা ডিনারসহ যেকোনো পার্টি আয়োজন করতে পারবেন।
রিসোর্টের ফুড মেন্যু দেখে, ৩-৪ জনের জন্য ১টি টেবিল বুক করতে পারেন। জনপ্রতি লাঞ্চ বা ডিনারের মূল্য হবে ৩০০ টাকা এবং রাত্রি যাপন করতে গেলে একটি রুমের ভাড়া পড়বে ৩০০০ টাকা।
এখান থেকেই শুরু আপনার আনন্দ ও উল্লাস। আপনি ইচ্ছে করলে এই বালু চরে করতে পারেন পিকনিক, ইচ্ছে করলে নিজেরা রান্না করতে পারেন। ছেলে-মেয়েরা মিলে খেলতে পারেন- ভলিবল,বাস্কেটবল,ব্যাডমিন্টন,ফুটবল,কাবাডি ইত্যাদি। ভয় নেই পড়ে গেলে মোটেই ব্যথা পাবেন না,কারণ চরজুড়ে শুধু বালু আর বালু।
আপনি ইচ্ছা করলেই শান্ত নদীতে গোসল করতে পারেন। ধরতে পারেন ছিপ দিয়ে মাছ। একটু দূরে যেতে চাইলে দেখতে পাবেন চরাঞ্চলের গ্রাম্যজীবন। বিকেলে বালুচরে ইজি-চেয়ার বা দোলনা চেয়ারে বসে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত বা ভোরের সূর্যোদয়।
রাতে করতে পারেন ক্যাম্প ফায়ার ও বারবিকিউ। ইচ্ছে করলেই চড়তে পারেন ঘোড়ার পিঠে, এয়ারবোর্টে ঘুরতে পারেন পদ্মার আশ-পাশ। এসব রাইড বা আনন্দের ক্ষেত্রে রিসোর্টের নিজস্ব চার্জ দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারেন নিরবচ্ছিন্ন আনন্দ। ভাগা-ভাগি করে নিতে পারেন নিজ নিজ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা অফিস সহকর্মীদের সাথে।
এখানে আছে ১৬টি ডুপ্লেক্স কটেজ। প্রতিটি কটেজে আছে একটি বড় বেডরুম,দুটি সিঙ্গেল বেডরুম,একটি ড্রইংরুম। আছে দুটি ব্যালকনি এবং একটি বাথরুম। শীতে কটেজের চারপাশ রঙ-বেরঙের ফুলে ভরে ওঠে আর বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর। রিসোর্টের উঠোনে ইজি চেয়ারে রাতের তারা গুনতে পারেন। দিনে পারেন দেশি নৌকায় পদ্মা বেড়াতে। রিসোর্ট রেস্টুরেন্টে টাটকা ইলিশ পাবেন। শাকসবজি,গরু,মুরগি আর হাঁসের মাংসও পাবেন। মৌসুমি ফলফলাদিও মিলবে। ঢাকা থেকে রিসোর্টের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টের নিজস্ব স্পিডবোট আছে।
যেভাবে যেতে হবেঃ
ঢাকার গুলিস্থান হতে বাসে করে যেতে হবে লৌহজং। সেখান হতে মাওয়া ফেরীঘাট। মাওয়া ফেরিঘাট হতে রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোটে করে সরাসরি রিসোটে।
ভাড়া ও অন্যান্যঃ
এক দিনে কটেজ ভাড়া (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা) ২৩০০ টাকা। ২৪ ঘণ্টার জন্য (সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা) ৩০০০ টাকা।
যোগাযোগ করতে পারেনঃ
এস এম নজরুল ইসলাম, মুঠোফোনঃ ০১৭১২১৭০৩৩০, ০১৭৫২৯৮৭৬৮৮, ল্যান্ড ফোনঃ ৮৭৫২৬১৭। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন ১০ টা থেকে ৬ টার মধ্যে বুকিংসহ সকল রকমের তথ্যের যোগাযোগ কর যাবে।
ঢাকা জিরু পয়েন্ট থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানায় পদ্মা নদীর বুকে এই রিসোর্ট। গাড়ি নিয়ে আসা যায় মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টায়। আর যদি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এ আসতে চান তাহলে ঢাকা-মাওয়া গামী ইলিশ অথবা গাংচিল বাসে করে আসতে পারবেন। খুব সুন্দর একটি জায়গা।