যেদিকে চোখ যায় সারি সারি গোলাপ বাগান। লাল টকটকে গোলাপ মাথা নাড়িয়ে স্বাগত জানাবে তার রাজ্যে। বাতাসে ভেসে আসা ফুলের সৌরভ মন মাতাবে আপনার। গোলাপের রাজ্য এই গ্রামের নাম সাদুল্লাপুর।
গ্রামের ভেতর দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা সরু পথ। পথের ধার ঘেঁষে অসংখ্য গোলাপের বাগান। যত দূর চোখ যায়, শুধু লাল গোলাপের সমারোহ। মাঝে মাঝে কিছু সাদা গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরার বাগানও চোখে পড়ে।
ঢাকার খুব কাছেই সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে এই গোলাপ গ্রাম সাদুল্লাহপুরের(Golap Gram/Village Sadullapur) অবস্থান। গোলাপের সুগন্ধ আর চোখ জুড়ানো দৃশ্য নিয়ে পুরো গ্রাম সেজে আছে। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি গ্রামের গোলাপের রাজ্যে চোখ আটকে যাবে যে কারও। গোলাপের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই দল বেঁধে চলে আসেন সাদুল্লাহপুরে।
প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার ফুল বিক্রি হয় এখান থেকেই যা ঢাকার বাজারের ফুলের চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ। ৩০০পিসের গোলাপ ফুলের আঁটি বিক্রি হয় ৩০০-৪০০ টাকায়। আপনি চাইলে ৫০-১০০ পিস নিজের জন্যও কিনে আনতে পারেন খুব সস্তায়।
ঢাকার আশেপাশে অল্প সময়ের জন্য কোথাও ঘুরে আসতে চাইলে সাদুল্লাপুর হতে পারে উপযুক্ত জায়গা। যাত্রা পথে যেমন নদীর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, তেমনি গোলাপের সৌন্দর্যও দেখতে পারবেন কাছ থেকে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বাস সার্ভিস আছে, যেগুলো মিরপুর বেড়িবাঁধে আসে। সেসব বাসে উঠে বটতলা ট্রলারঘাটে নামতে হবে। মিরপুর এক নম্বর গোল চত্বর কিংবা গাবতলী থেকে রিকশাতেই দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট যাওয়া যায়। ঘাট থেকে ট্রলার ছাড়ে ৩০ মিনিট পরপর। জনপ্রতি ভাড়া ২০ টাকা দিতে হবে। হেঁটেই পুরো গ্রাম দেখা যায়। চাইলে রিকশা নিয়েও ঘুরে দেখতে পারেন।
এছাড়া নিজের গাড়ি কিংবা সড়ক পথে যাওয়ারও রুট আছে।
মিরপুর ১ থেকে আলিফ কিংবা মোহনা বাসে উঠে সরাসরি বিরুলিয়া ব্রিজ। অথবা, মিরপুর-১/১০ বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বিরুলিয়া যেতে মিরপুর বেড়ীবাঁধ উপর দিয়ে যাওয়া আব্দুল্লাপুরগামী(মোহনা পরিবহন) বাসে চড়ে বসুন। অথবা মিরপুর-১ এর কাছেই অবস্থিত দিয়াবাড়ি থেকে মিনিবাসে চড়তে পারেন। যেভাবেই যান বেড়ীবাঁধের হাইওয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষণ এগোলেই বিরুলিয়া সেতু পরবে।
তারপর আটো কিংবা মিনি বাসে (৫ টাকা) করে আক্রাইন বাজার। চাইলে রিক্সা করেও যেতে পারেন ভাড়া ৩০ টাকা। তারপর আক্রাইন বাজার থেকে গোলাপগ্রাম (রিক্সা ৩০ টাকা আর অটো ১৩ টাকা করে ভাড়া নিবে)।
খাবার সাথে নিয়ে গেলে খুব ভালো হয়, যদি না পারেন সেক্ষেত্রে বাজারে দুটি খাবার হোটেল আছে মোটামুটি মানের। সেখানে ভাত, ভর্তা, সবজি, ছোটমাছ ইত্যাদি পাওয়া যায়। তাছাড়া একটি মিষ্টির দোকানও রয়েছে।
ফিড়ে আসার পথে বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে একটু হেটে বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি অবশ্যই দেখে আসবেন। জমিদার বাড়ির বিস্তারিত
সাবধানতা
ঘুরতে গিয়ে ফুলের যেন কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি।