আখাউড়ার খড়মপুরে অবস্থিত হজরত সৈয়দ আহম্মদ (রঃ) এর দরগাহ যা কেল্লা শহীদের দরগাহ নামে সমগ্র দেশে পরিচিত । কেল্লা শহীদের দরগাহ সর্ম্পকে যে কাহিনী প্রচলিত আছে তা হচ্ছে এই যে, সে সময় খড়মপুরের জেলেরা তিতাস নদীতে মাছ ধরত । একদিন চৈতন দাস ও তার সঙ্গীরা উক্ত নদীতে মাছ ধরার সময় হঠাৎ তাদের জালে একটি খন্ডিত শির আটকা পড়ে যায় । তখন জেলেরা ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে এবং খন্ডিত শিরটি উঠাতে গেলে আল্লাহর কুদরতে খন্ডিত শির বলতে থাকে ‘‘একজন আস্তিকের সাথে আর একজন নাস্তিকের কখনো মিল হতে পারে না।
তোমরা যে পর্যন্ত কলেমা পাঠ করে মুসলমান না হবে ততক্ষণ আমার মস্তক স্পর্শ করবে না ।’’ খন্ডিত মস্তকের এ কথা শুনে মস্তকের কাছ থেকে কলেমা পাঠ করে চৈতন দাস ও সঙ্গীরা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যায় । মস্তকের নির্দেশ মোতাবেক ইসলামী মতে খড়মপুর কবরস্থানে মস্তক দাফন করে । ধর্মান্তরিত জেলেদের নাম হয় শাহবলা, শাহলো, শাহজাদা, শাহগোরা ও শাহর ওশন । তাঁরাই এ দরগাহের আদিম বংশধর ।
এই দরগাহের খ্যতি ধীরে ধীরে চর্তুদিঁকে ছড়িয়ে পড়ে । এ থেকেই শাহ পীর সৈয়দ আহম্মদ গেছুদারাজ ওরফে কেল্লাশহীদের পবিত্র মাজার শরীফ(Khela Sha Mazar) নামে পরিচিতি লাভ করে । ২৬০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত দরগা শরীফের জায়গা তৎকালীন আগরতলা রাজ্যের মহারাজা দান করেন ।
বিভিন্ন ঐতিহাসিকগণ অনুমান করেন যে, আওলিয়া হজরত শাহ জালাল (রঃ) এক সঙ্গে সিলেটে যে ৩৬০ জন শিষ্য এসেছিলেন হজরত সৈয়দ আহম্মদ গেছুদারাজ ছিলেন তাঁদের অন্যতম । তরফ রাজ্যেও রাজা আচক নারায়নের সঙ্গে হজরত শাহজালালের প্রধান সেনাপতি হজরত সৈয়দ নাসিরউদ্দিন যে যুদ্ধ পরিচালনা করেন সে যুদ্ধে হজরত সৈয়দ আহম্মদ গেছুদারাজ শহীদ হন এবং তাঁর মস্তক তিতাস নদীর স্রোতে ভেসে আসে। প্রতি বছর ওরসে কেল্লাশহীদের মাজারে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।
কিভাবে যাওয়া যায়:
কাউতলী থেকে লোকাল সিএনজি যোগে যাওয়া যায় ।