ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উদ্যান গুলোর একটি হচ্ছে ওসমানী উদ্যান(Osmani Uddayan)। ঢাকার গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের (নগর ভবন) বিপরীত পাশে এবং সচিবালয়ের পিছনে প্রায় ২৩.৩৭ একর জুড়ে ওসমানী উদ্যান অবস্থিত। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার লেঃ জেঃ এম এ জি ওসমানির নামে ওসমানি উদ্যান নামকরন করা হয় এবং তারই স্মরনে উদ্যানটির পাশে ওসমানি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়। ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন (নগর ভবন) উদ্যানটি তত্ত্বাবধানসহ যাবতীয় সংস্কার ও সার্বিক নিরাপত্ত্বা নিশ্চিত করে থাকে।
উদ্যানটিতে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার জন্য মোট ৩টি সদর দরজা রয়েছে। মূল দরজাটি সিটি কর্পোরেশনের ঠিক বিপরিত পাশে, দ্বিতীয় দরজাটি রয়েছে গোলাপ শাহ মসজিদের পাশ ঘেষে এবং তৃতীয় দরজাটি ওসমানি অডিটোরিয়ামের পাশ ঘেষে।
উদ্যানটির প্রবেশ মূখেই রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য দিক নির্দেশক ম্যাপ। এতে ওসমানী উদ্যান, লেক, স্থাপনা এবং অন্যান্য ওয়াকওয়ে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে ওসমানী উদ্যানকে মোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এবং এ মানচিত্রে সেক্টরগুলোর অবস্থান সুন্দর ভাবে লক্ষ্য করা যায়। মূল ফটক পেরিয়ে চোখে পড়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ।
সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রধান সেনাপতি মীর জুমলার কামানটি বর্তমানে ওসমানী উদ্যানের শোভা বর্ধন করে রয়েছে। কামানটি মীর জুমলা আসাম যুদ্ধে ব্যবহার করেছিলেন।
দেশি বিদেশি নান জাতের ফুল গাছ সহ নানান জাতের পাতা বাহার গাছের সমাহরোহ। এখানে নানা জাতের এবং দূর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ চোখে পড়ে। তারমধ্যে কড়ই, আমলকি, তেতুল, বট, অর্জুন, মেহগনি অন্যতম। এছাড়াও রয়েছে বড়ই গাছ, আম গাছ, কাঁঠাল গাছ, কলা গাছ এবং নিম গাছ।
ওসমানী উদ্যানে অন্যতম আকর্ষন হচ্ছে প্রায় ৫.৩৪ একর জুড়ে বিস্তৃত দুটি লেক। লেকের পাশেই রয়েছে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ২টি বালু দ্বীপ।
দর্শণার্থীদের জন্য ওসমানী উদ্যান প্রতিদিন খোলা থাকে। গ্রীস্মকালে এটি সকাল ৫.০০ টা থেকে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত এবং শীতকালে সকাল ৬.০০ টা থেকে রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক বন্ধ নেই।
কিভাবে যাবেন –
রাজধানী ঢাকার যে কোন স্থান থেকে গুলিস্তানে আসতে হবে। তার পর সেখান থেকে হেটেই ওসমানী উদ্যান যাওয়া যাবে।