কথিত আছে কোন এক জ্যোৎস্না রাতে প্রজাদরদী মানবতাবাদী জমিদার রায় বাহাদুর তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে বৈঠকখানার বাহিরে প্রাণ ভরে জ্যোৎসা দেখছিলেন। এমন সময় দেখতে পান অদুরে বিল থেকে কতিপয় অজ্ঞাতনামা কুলশীল মহিলা কলসী নিয়ে জল নিচ্ছে। তিনি দৃশ্যটি দেখে কৌতুহল বশতঃ তখনই খবর নিয়ে জানলেন এলাকার অনেকেই সুপেয় পানির অভাবে রাতে বিল থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে। বিষয়টি তাঁর মনে খুবই কষ্ট দেয় এবং প্রজাদের এই অমানবিক কষ্ট মোচনের লক্ষ্যে জমিদার রায় বাহাদুর পরের বছরই ১৩৬৮ সালে বিহার থেকে দিঘি খনন বিশেষজ্ঞ এনে মোট ১১ একর জায়গায় সুদৃশ্য এই দিঘি খনন করেন। জনগনের সুবিধার্থে দিঘির চারদিকে সুপ্রসস্ত ১২টি ঘাটলা এবং এখানে সারা বছর স্বচ্ছ পানি নিশ্চিত করার জন্যে ৬টি সুগভীর ইন্দারা (কুয়া) খনন করা হয়। এছাড়া নৈসর্গিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে দিঘির চারপাশে লাগানো হয় সুদৃশ্য খেজুর গাছ।
উপেন্দ্র সরোবরে (Upendra Sarovar) ১২টি পাকা ঘাট রয়েছে। ফলে স্থানীয়ভাবে এটি ১২ ঘাটলা দীঘি নামে পরিচিত।
প্রতিদিন এখানে ছুটে আসেন টাঙ্গাইল জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পেরিয়ে বিভিন্ন জেলার ভ্রমণ পিপাসুরা। নাগরপুরের জমিদারদের অনন্য স্থাপত্যকীর্তি অপরূপ প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাঠুরি শিব মন্দিরের পাশে দৃষ্টিনন্দন উপেন্দ্র সরোবরটি এ উপজেলাবাসীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। এ কারণে প্রতিদিন সব বয়সের হাজারো মানুষ একটু স্বস্তি পেতে এখানে ছুটে আসেন। ছুটে আসেন মৎস্য শিকারীরাও।
আর বিকালে সরোবরটি পরিণত হয় শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের মিলন মেলায়। এবার ঈদ উৎসবে বিনোদন প্রেমীদের ভিড় বহুগুণে বেড়ে যাওয়ায় সরোবরের পশ্চিম পাড়ের প্রধান প্রবেশদ্বারসহ চারপাশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সরোবরে সার্বক্ষণিক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারির কারণে এবার ভ্রমণ পিপাসুরা স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়তি বিনোদন উপভোগ করছেন।
কিভাবে যাওয়া যায়:
টাংগাইল শহর হতে সিএনজি যোগে নাগরপুর উপেন্দ্র সরোবরে যাওয়া যায়।