লিখ্যিয়াং ঝর্ণা কিংবা লিক্ষ্যং ঝর্ণা যে নামেই ডাকা হোক নাকে লিখ্যিয়াং ঝর্ণা বা লিক্ষ্যং ঝর্ণাই (Likkhyang Waterfall) বান্দরবানের সবচেয়ে অপরিচিত ট্রেইল এবং অদেখা সৌন্দর্য্যে মধ্যে একটি। এই ঝর্নাতে খুব কম মানুষেরই পদচারণা হয়েছে এ পর্যন্ত। রেমাক্রি থেকে দূরের ছোট মদক ঘাটের আগে, একটি গ্রামে এই ঝর্ণার অবস্থান।
লিক্ষ্যং বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু ঝর্ণার তালিকায়, ৪র্থ স্থান পেয়েছে। লিক্ষ্যং এর উচ্চতা, ৩০০ ফুটের কাছাকাছি এবং এই লোকাল ভাষায় অনেকে লিখ্যিয়াং নামেও চিনে। লিক্ষ্যং এর ট্রেইলটি বেশ সুন্দর। দুপাশ দিয়ে, বড় বড় পাথরের ২টি ঝিরিপথ নেমে এসে মাঝখানে ছোট ছোট খুমের মতো জায়গায় মিলে। জায়গাটা অনেক পিচ্ছিল, তার উপর পানির স্রোত, আর প্রচণ্ড বাতাস । লিক্ষ্যং ঝর্ণাটা তিন দিক বন্ধ এক কুয়ার মতো যেন, নিচের কুণ্ড একটা সুইমিং পুলের মতো, পানি সবুজ ।
লিক্ষ্যং ঝর্ণায় যাওয়ার পথ কিছুটা দুর্গম। কিন্তু, মনোবল থাকলে এই ঝর্ণার স্বপ্নযাত্রাটি খুব সহজে পূরণ করা যায়। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন, শুধু তাদের জন্যই লিক্ষ্যং ঝর্ণা।
লিক্ষ্যং ঝর্ণা যাওয়ার আগের প্রস্তুতি –
- এটি সম্পূর্ণ এডভেঞ্চার ট্রিপ। এখানে প্রচুর পরিমানে হাঁটতে হবে। তাই আগে থেকে শারিরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
- নিরাপত্তার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (যদি থাকে) কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে রাখা যেতে পারে।
- লিক্ষ্যং ঝর্ণা দুর্গম এলাকায় হওয়ায় আপনাকে মোবাইল নেট ওয়ার্কের বাইরে থাকতে হবে। সেজন্য আগে থেকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
- খুব প্রয়োজনীয় ছাড়া কিছু নিবেন না, অতিরিক্ত কাপড় ভ্রমণের প্রধান শত্রু। দুটি থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, একটি বা দুটি টি শার্ট নিলেই যথেষ্ট।
- কিছু শুকনা খাবার (খেজুর, কিসমিস, বাদাম, বিস্কিট,ইনস্ট্যান্ট নুডলস) রাখবেন কাজে আসবে।
- মোটামুটি কষ্ট করতে হবে ধরেই নিবেন, তাহলে সকল কষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত মনে হবে না।
- পলিথিন।
- তোয়ালে।
- টর্চ / মোমবাতি।
- টুথব্রাশ, টুথপেস্ট।
- ক্যামেরা (ব্যক্তিগত ইচ্ছা)।
- পানির বোতল।
- প্রয়োজনীয় ঔষধ।
- ছাতা, সানগ্লাস, ক্যাপ।
- ফার্স্ট এইড।
লিক্ষ্যং ঝর্ণা কিভাবে যাবেন –
বান্দরবান ভ্রমনের জন্য অবশ্যই আপনাকে গাইড নিতে হবে। গাইডই আপনাকে নিয়ে যাবে । তবে নিজের জানার এবং মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে নিচের দুটি লাইন আপনাকে সাহায্য করবে।
বান্দরবান থেকে থানচি পর্যন্ত জিপে করে। থানচি থেকে রেমাক্রি। রেমাক্রি পৌঁছার পর সেখান থেকে আরও ৩০ মিনিট নৌকায় গেলে গ্রাম। তারপর এই গ্রাম থেকে পুরাটাই হাটা রাস্তা।