হাতিরঝিল – ঢাকা

ব্যস্ত শহরে ক্লান্তিকর নাগরিক জীবনের যখন দুর্বিষহ অবস্থা যখন প্রান খোজে প্রশান্তির ছোয়া কিংবা একটু বিনোদন তখন ছুটিন দিন কিংবা বিকালটা আনন্দে কটাতে চলে আসতে পাড়েন ঢাকার আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র  হাতিরঝিল(Hatirjheel)  থেকে। দিনে কিংবা রাতে যে কেউই ঘুরে আসতে পারেন হাতিরঝিলে।

জমি দখল রোধসহ বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, জলাবদ্ধতা ও বন্যা প্রতিরোধ, ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজধানীর যানজট নিরসন এবং শ্রীবৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘স্পেশাল ওয়ার্কস অরগানাইজেশন’র (এসডব্লিউও) তত্ত্বাবধায়নে পাঁচ বছর কাজ করার পর হাতিরঝিলকে গড়ে তোলা হয় বিনোদনের স্থান হিসেবে।

হাতিরঝিলে নৌকা ভ্রমণ

যান্ত্রিক ঢাকার মাঝে যেন এক অন্য ঢাকা হাতিরঝিল। একপাশে সবুজ, অন্য দিকে হাতিরঝিলের টলটলে পানি। সেই টলটলে পানির বুকে ছুটে যাচ্ছে যাত্রীবাহী ওয়াটারবাস। এটি যেমন দিচ্ছে মনোরম এক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, তেমনি যানজটহীন গুলশান থেকে কাওরান বাজারের দূরত্ব অতিক্রম করা যাচ্ছে সহজে। এখন ৫টি ওয়াটারবাস চলছে। এক একটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪৫ জন। নিয়মিত যাত্রীদের সাথে প্রতিদিন বেড়াতে আসে ট্যুরিস্ট।

হাতিরঝিল লেকে ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। ওয়াটার ট্যাক্সিতে একসাথে ৪৫ জন যাত্রী চড়তে পারেন। এফডিসি টার্মিনাল থেকে গুলশান টার্মিনালে যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট। এর চেয়েও ৫ মিনিট কমে ট্যাক্সি পৌঁছে যায় রামপুরা টার্মিনালে। এফডিসি থেকে রামপুরা টার্মিনাল পর্যন্ত ২৫ টাকা ও গুলশান টার্মিনাল পর্যন্ত ৩০ টাকা টিকিটের মূল্য। ট্যাক্সির ভেতরে একটি মিনি ক্যান্টিন রয়েছে। যাত্রীরা ওখান থেকে বিস্কুট, কেক, কোমল পানীয় ও হালকা খাবার কিনে খেতে পারেন।

হাতিরঝিলের চক্রাকার বাস সার্ভিস

হাতিরঝিলের চারপাশের মানুষের জন্য আছে চক্রাকার বাস সার্ভিস। এসব বাস ঢাকার অন্যান্য সব সাধারণ বাসের থেকে একটু আলাদা ভেতরের আসন বিন্যাসের জন্য। প্রায় ৩২-৪৬ জনের আসন ভেতরে এমনভাবে রয়েছে যাতে আসন গ্রহণকারী সবাই মুখোমুখি বসতে পারে। অনেকটা বাইরের দেশের মেট্রোরেলের আসন বিন্যাসের মতো। এই বাসের সার্ভিস চালু থাকে সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। বাসটি যাত্রা শুরু করে কাওরান বাজারের এফডিসি থেকে এবং রামপুরা, বনশ্রী হয়ে শুরুর স্থানেই শেষ হয়।

হাতিরঝিলে সর্বমোট ৮টি স্টপেজ রয়েছে। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত ১০ টাকা। হাতিরঝিলের এক মাথা হতে আরেক মাথায় যাওয়ার জন্য আপনার লাগবে মাত্র ২০ টাকা। আর পুরো হাতিরঝিল ঘুরে আসতে লাগবে মাত্র ৩০ টাকা।

মিউজিকের ছোঁয়ায় আলোর ফোয়ারা

খোলা আকাশের নিচে মুক্ত হাওয়ার পাশাপাশি হাতিরঝিলে সদ্য যোগ হয়েছে রঙ-বেরঙের আলোর সাথে পানির ফোয়ারা। মিউজিকের সাথে তাল মিলিয়ে নাচতে থাকে এসব ফোয়ারাগুলো। সাথে চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানি। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন। এর ফোয়ারার পানি ১০ মিটার থেকে ৮০ মিটার পর্যন্ত ওপরে উঠতে পারে। মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন এবং অ্যাম্পিথিয়েটারের বাড়তি বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ মিলে বিভিন্ন উৎসবে। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা এবং রাত সাড়ে ৯টায় ১৫ মিনিটের জন্য চালু করা হয় এ বর্ণিল ফোয়ারা।

কিভাবে যাবেন –

ঢাকার যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে কিংবা সিএনজি করে হাতিরঝিল আসা যায়। হাতিরঝিল যেহুতো বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত তাই আপনি আপনার সুবিধা মত যে কোন স্থান থেকে ভ্রমন শুরু করতে পারেন।

 

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 9, 2018

হাতিরঝিল – ঢাকা, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. হাতিরঝিল এলাকাটি আমি পরিদর্শন করেছি। এলাকাটি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। তবে রাতের বেলায় হিজরাদের আনাগুনা বেশী, পর্যটকদের বিরক্ত করে এবং তাদের কাছ থেকে হিজরাগন টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এছাড়া লেকের পাশে যে কাঠ গাছগুলো লাগানো হয়েছে, সে কাঠগাছ গুলোর জায়গায় যদি আম কাঠাল গাছ লাগানো হতো, তাহলে ঢাকা শহরের মানুষ এই আম কাঠাল খেয়ে শেষ করতে পারতো না। এখনও পাকা জায়গা আছে, সেখানে আম কাঠাল গাছ লাগালে এখন অনেক ফল উৎপাদন হবে, যা ঢাকা শহরের ফলের চাহিদা মিটাবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

    1. পুরো হাতিরঝিলের লেকের পাশের জায়গায় সব কাঠগাছ কেটে ফল গাছ লাগানো হলে ঢাকা শহরের মানুষের ফলের চাহিদা অনেকাংশে মিটে যাবে।

  2. আম, জাম, কাঠাল, আমলকি, কাঠবাদাম, জামবুরা, পেয়ারা, লটকন, হরতকি, বয়রা, লিচু, নারিকেল, কমলা, আপেল, মাল্টা ইত্যাদি জাতীয় ফল গাছ লাগানো হলে পথচারীগন অনায়াসে এই সব ফল খেতে পারবে এবং পুষ্টি সমস্যা দুর হবে। আর এই গুলো দেখবাল করবে, হাতিরঝিল এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনী (রেড ফোর্স)। সবাইকে ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.