সোমেশ্বরী নদী – নেত্রকোণা

ঘুরে আসুন পাহাড় নদী গাছ-গাছালিঘেরা আদিবাসী অধ্যুষিত নেত্রকোণার দূর্গাপুর (Durgapur)! বাজি রেখে বলতে পারি, গারোদের দেশে পা ফেলতেই আপনার মন প্রফুল্ল হয়ে উঠবে। দূর্গাপুরের আসল সৌন্দর্য স্বচ্ছ সোমেশ্বরী নদী। সোমেশ্বরী নদীটি (Someshwari Nodi) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড়ের অভ্যন্তরে সীমসাংগ্রী বা সমসাংগা নামক স্থান থেকে উৎপন্ন হয়ে বাঘমারা বাজারের পাশ দিয়ে দূর্গাপুরে প্রবেশ করেছে। দুর্গাপুরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে এ অসাধারণ সুন্দর নদীটি। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে সৃষ্ট এ নদী মেঘালয়ের বাঘমারা বাজার হয়ে রানিখং পাহাড়ের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সীমসাংগ্রী থেকে উৎপন্ন বলেই সোমেশ্বরী বলা হয়। আবার জনশ্রুতি আছে যে, সোমেশ্বর পাঠক নামে এক সিদ্ধপুরুষ এ অঞ্চলের দখল নেওয়ার পর থেকে নদীটি সোমেশ্বরী নাম লাভ করে। আহা, একেক ঋতুতে এ নদীর সৌন্দর্য একেক রকম! তবে সারা বছরই এর জল টলটলে স্বচ্ছ। বর্ষা মৌসুমে বেড়ে গেলেও শীতে সোমেশ্বরীর জল অনেকাংশেই কমে যায়।
সোমেশ্বরী নদী, দূর্গাপুর
সোমেশ্বরী নদী, দূর্গাপুর

শীত কালে যখন পানি কম থাকে তখন সোমেশ্বরী নদীতে হাটু পানিতে নেমে হাটা হাটি করবেন। ফিলিংস টা দুর্দান্ত হবে।

সুসং দুর্গাপুর বাজার থেকে রিক্সা বা মোটরসাইকেল নিয়ে সুনীল সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে, গারো পাহাড়, গোলাপী পাহাড়, নীল/সবুজ পানির লেক ঘুরে আসা যায়। সেখানে ভারত বাংলাদেশ বর্ডার ছাড়াও দেখার মতন রয়েছে একটা চার্চ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ট্রেনিং নেয়ার জন্য তৈরী কয়েকটা পিলার । সারাদিনের জন্য রিক্সা ভাড়া পড়বে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে (যার থেকে যা রাখতে পারে)। রিক্সা আপনাকে খুঁজতে হবেনা, রিক্সাই আপনার হোটেলে এসে বসে থাকবে। আর মোটর সাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে তালুকদার প্লাজা/ অগ্রণী ব্যাংক এর সামনে থেকে।

অবস্থানঃ

দূর্গাপুর নেত্রকোণা (Netrokona) জেলার একটি উপজেলা।

কোথায় থাকবেনঃ

ছোট গ্রুপের (২-৪জন) জন্য যেটা সবচেয়ে ভাল থাকার জায়গা হবে সেটা হচ্ছে স্বর্ণা রেস্ট হাউজ। বাস যেখানে থামবে সেখানেই এটা নতুন গড়ে উঠেছে। বাইরে থেকে দেখতে যদিও খুব একটা আহামরি কিছু না। ৪০০ টাকার মত ভাড়া পড়বে ডাবল বেডের একেকটা রুম। এ.সি. রুমও খুব শীঘ্রি বোধহয় এরা চালু করবে।

YWCA এর জায়গাটাও ভাল কিন্তু রেস্ট হাউজটা পুরনো। বাগান আছে সামনে। কনফারেন্স রুম, মঞ্চ এসবও আছে। তবে এটা মূল রাস্তা থেকে বেশ খানিকটা ঝোপঝাড়ের ভিতর দিয়ে হেটে গিয়ে পৌছতে হবে। খাওয়া দাওয়া এবং ঘুরতে হলে বারবার বাইরে আসা ঝামেলার হবে। যদি বড় দলবল নিয়ে যাওয়া হয়, তবে এটা ঠিক আছে। নতুবা এটার চিন্তা বাদ দেওয়াই ভাল এখানে ভাড়া একেক বেড ৩০০ টাকা করে পুরা রুম ৬০০ টাকা। এ.সি. রুম একটা আছে যেটা ৭০০ টাকা।

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে সুসং দুর্গাপুরে যাওয়ার জন্য সবচাইতে ভালো হবে বাস। ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সুসং দুর্গাপুরে উদ্দেশ্যে বেশ কিছু বাস ছেড়ে যায় – ভাড়া পরবে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে। এই বাস আপনাকে সুসং দুর্গাপুরের বাস স্ট্যান্ড এ নিয়ে নামাবে।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 27, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.