ঝালকাঠি শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা সুগন্ধা নদীর পাড়ে সুজাবাদ কেল্লা (Sujabad Kella) অবস্থিত। মোগল সাম্রাজ্যের শেষদিকে বাংলার এই অঞ্চল মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের অবাধ লুণ্ঠন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। শুধু তাই নয় এই জলদস্যুরা এক পর্যায়ে এই অঞ্চলের বসবাস করা নিরীহ মানুষ বিক্রি করার ভয়াবহ বাণিজ্যে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
বিখ্যাত পর্যটক সেবাষ্টিয়ান ম্যান্ডরিক তৎকালীন তার ডায়েরিতে সেই ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনায় উল্লেখ করেন যে, পর্তুগিজ এবং আরাকানি জলদস্যুদের অসহনীয় উৎপাতের কারণে এই অঞ্চল জনশূন্য ভূমিতে পরিণত হয়েছিলো। দক্ষিণাঞ্চলের ত্রাস দুর্দমনীয় এই বাহিনীকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে শাহজাদা সুজা ষোলশ চুয়ান্ন সালে সুজাবাদ গ্রামের পত্তন করেন এবং জলদস্যুদের দমন এবং তাদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সুজাবাদ গ্রামে দু‘টি কেল্লা তৈরি করেন ।
কেল্লাদ্বয়ের একটি মাটি এবং অন্যটি ইট দ্বারা তৈরি করা। শাহ সুজা নির্মিত কেল্লাদ্বয় যথাক্রমে অন্দর এবং বাহির কেল্লা নামে পরিচিত ছিলো।
জনশ্র“তি অনুসারে এই কেল্লা দু’টি একরাতের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিলো । আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই কেল্লা ভূতের গড় নামে পরিচিত । বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কের মাঝামাঝি দক্ষিণ পার্শ্বে গৌরবময় অতীতের শৌর্য-বীর্যের কাহিনী ধারন করা সেই ঐতিহাসিক কেল্লার অতি সামান্য চিহ্ন শুধুমাত্র পরিদৃষ্ট।
আরো জানা যায়, সম্রাট শাজাহান তার পুত্র আওরঙ্গজেব কতৃক গৃহবন্দী হলে আওরঙ্গজেবের সাথে তার ভাইয়েরা যুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধে পরাজিত শাহজাদা সুজা আওরঙ্গজেবের রোষানল থেকে বাঁচতে এ কেল্লায় আশ্রয় নেন। সুগন্ধা নদীর পারে এ কেল্লায় গেলে আজও শাহ সুজার সেই কষ্টের দিনগুলির কথা মনে পড়ে যায়।
যেভাবে যাবেন :
ঢাকা থেকে লঞ্চ বা বাসে ঝালকাঠি। এরপর রিক্সা নিয়ে মিনি পার্ক সংলগ্ন কেল্লায় যাওয়া যায়।