শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ – রায়েরবাজার

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত যে সকল স্থান ও স্থাপনা রয়েছে তারই মধ্যে প্রধান একটি স্থাপনা হলো ‘রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ’। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ(Shahid Buddijibi Sriti Shoudho) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতি স্মারক। এই স্মৃতিসৌধটি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকায় অবস্থিত।

১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময়টাতেই, পাকিস্তানী সৈন্যরা এবং তাদের স্থানীয় দোসররাে এদেশের শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, কবি ও লেখকদের ক্রমে হত্যা করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুই দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ সংখ্যক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে অধ্যাপক, সাংবাদিক, ডাক্তার, শিল্পী, প্রকৌশলী, লেখকসহ পূর্ব পাকিস্তানের ২০০ জন বুদ্ধিজীবীদের ঢাকায় একএিত করা হয়েছিল। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগ এবং শহরের বিভিন্ন স্থানের নির্যাতন সেলে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের রায়েরবাজার এবং মিরপুরের মধ্যে সার্বজনীনভাবে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস(“শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস”) হিসেবে বাংলাদেশে শোক প্রকাশ করা হয়।

নিহত বুদ্ধিজীবীদের আনুমানিক সংখ্যা: শিক্ষাবিদ ৯৯১, সাংবাদিক ১৩, চিকিত্সক ৪৯, আইনজীবী ৪২, অন্যান্য (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী এবং প্রকৌশলী) ১৬ জন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের নকশার তাৎপর্যঃ

স্মৃতিসৌধের যেখানে মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায় সেখানে রায়েরবাজারের মূল ইটভাটা ১৭.৬৮মি পুরু, ০.৯১মি উচু এবং ১১৫.৮২মি দীর্ঘ বাঁকা ইটের প্রাচীর। প্রাচীর নিজেই দুঃখ ও দুঃখের গভীরতা প্রদর্শক, যার দুই প্রান্তেই নষ্ট হয়ে গেছে।

দেয়ালের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এ ৬.১০মি গুনন ৬.১০মি বর্গাকার জানালা দিয়ে দর্শকরা আকাশ দেখতে পারে, এছাড়াও প্রকাণ্ড প্রাচীরের স্কেল নিচের দিকে গেছে। বাঁকা প্রাচীরের সামনে পানির মধ্যে অবস্থিত একটি কালো গ্রানাইট স্তম্ভ যা বিষাদের প্রতিনিধিত্ব করে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ কিভাবে যাবেনঃ

দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে সরাসরি মোহাম্মদপুর  অথবা ফার্মগেইট চলে আসুন। মোহাম্মদপুর  থেকে রিক্সা করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ যাওয়া যায়।

ফার্মগেইট থেকে যেতে চাইলে ফার্মগেইট টু মোহাম্মদপুর  কিছু বাস সার্ভিস আছে সেগুলো কিংবা টেম্পুতে করে মোহাম্মদপুর চলে আসুন। মোহাম্মদপুর  থেকে রিক্সা করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 8, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.