বিজ্ঞান জাদুঘর – ঢাকা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগরে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর প্রদর্শন উপযোগী প্রাকৃতিক সামগ্রী এবং স্থানীয় সৃষ্টিশীল বিজ্ঞানীদের অনুপ্রেরণা ও উদ্ভাবনমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য সমৃদ্ধ এ জাদুঘর।

প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার, যুগের পরিবর্তনের কারণ খুঁজতে এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে ক্রমেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে (National Museum of Science and Technology)। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন এ জাদুঘরে আসছে হাজার হাজার দর্শনার্থী।

দেশের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নির্দশন সামগ্রী প্রদর্শন, বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার নির্দশন ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষিত মানব সমাজ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ফলে এর বিস্তৃতি এখন শহর, নগর কিংবা গ্রাম সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে। এটি রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সব শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য বিজ্ঞান মেলা, বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সামগ্রী প্রদর্শনের আয়োজন করে। সেইসঙ্গে মিউজু বাসের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রদর্শন সামগ্রী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছে। যে কারণে তরুণদের আগ্রহ ক্রমেই বেড়ে চলেছে জাদুঘরের প্রতি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের তত্ত্বাবধানে এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও জাদুঘর সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এটি পরিচালিত হচ্ছে। জাদুঘরটিতে মোট ৭টি গ্যালারি, প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য দুটি আলাদা পথ এবং ঘুরে দেখানোর জন্য গাইডলাইন রয়েছে। শনি ও রোববার আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে সন্ধ্যার পরে টেলিস্কোপের সাহায্যে আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে পারে দর্শনার্থীরা।

চারতলা এই জাদুঘরের ১ম ও ২য় তলায় গ্যালারি, ৩য় তলায় অফিস এবং ৪র্থ তলায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি অবস্থিত। ১ম ও ২য় তলায় সায়েন্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি, বায়োলজি, ইনফরমেশন টেকনোলজি, ফান সায়েন্স এবং ইয়ং সায়েন্টিস্ট প্রোজেক্ট গ্যালারি রয়েছে।

এছাড়াও ভবনটিতে একটি লাইব্রেরি, ওয়ার্কশপ ও অডিটোরিয়াম রয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সিঁড়ি ও একটি লিফট রয়েছে ভবনে। ভবনের সামনে একটি ডাইনোসরের মূর্তি এবং একটি ছোট যুদ্ধবিমান রাখা হয়েছে। জাদুঘর প্রাঙ্গণে একসঙ্গে ৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা রাখা হয়েছে। রয়েছে অগ্নি নির্বাপনের সব ধরনের ব্যবস্থা। তবে জাদুঘরের ভেতরে ছবি তোলা এবং জোরে শব্দ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দর্শনার্থীর সঙ্গে বহন করা ব্যাগ, ক্যামেরা ইত্যাদি কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়।

এই জাদুঘরের সঙ্গে নিবন্ধিত দেশের জেলা ও উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৯০টি বিজ্ঞান ক্লাব রয়েছে। বিজ্ঞান ক্লাবগুলো জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে বিজ্ঞান প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষাদান, বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটাতে স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া জেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান মেলা, দলভিত্তিক পরিদর্শন শেষে সাধারণ কুইজ, বিজ্ঞান বক্তৃতার আয়োজন এবং আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে।

বিজ্ঞান জাদুঘরের সময় সূচী ও প্রবেশ মূল্য –

সপ্তাহের শনি থেকে বুধবার পর্যন্ত জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারেন। তবে ৫ বছরের নিচের শিশুর জন্য প্রবেশমূল্য ফ্রি। প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবার এবং সব সরকারি ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকে। জাদুঘরটিতে অন্যান্য দিনের তুলনায় সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের সময় দর্শনার্থীর সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যায়।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: ভ্রমণ পাগল,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: নভেম্বর 17, 2019

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.