পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি – শেরপুর

শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ, পর্যটকদের তেমন ভিড় নেই। কারন, শেরপুরের পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি (Pone Ten Ani Jamidar Bari) তেমন বিখ্যাত নয়। হয়ত আপনিও এর নামই শোনেন নি। কিন্তু চমৎকার এই জমিদার বাড়ীতে একবার গেলে যেন মনটাই পড়ে থাকবে সেখানে। বাড়িটি এখনো অক্ষতই আছে বলা যায়। চমৎকার নকশা করা স্তম্ভগুলো মুগ্ধ করবে যে কোন দর্শনার্থীকে।

জমিদার সত্যেন্দ্র মোহন চৌধুরী ও জ্ঞানেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বাড়িকে বলা হত ‘পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি’। গ্রীক স্থাপত্যের অনুকরণে নির্মিত স্থাপত্যটি এখনো অক্ষত অবস্থার সাক্ষ্য বহন করছে জমিদারী আমলের। যদিও এদেশ থেকে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগেই। বাড়িটির নির্মাণকাল গোপীনাথ মন্দির নির্মাণেরও অনেক পূর্বে। সুপ্রশস্ত বেদী, প্রবেশ প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে অনেকগুলো অলংকৃত স্তম্ভ। স্তম্ভগুলোর নিচ থেকে উপর পর্যস্ত কারুকাজ খচিত নকশা। কার্ণিশেও বিভিন্ন প্রকারের মটিভ ব্যবহার করা হয়েছে। আস্তরণ ও পলেস্তারে চুন ও সুড়কীর ব্যবহারও লক্ষণীয়। ছাদগুলোতে গতানুগতিকভাবে লোহার রেলিংয়ের সঙ্গে রয়েছে চুন সুড়কীর ঢালাই। যা একে অন্যান্য জমিদার বাড়ি থেকে আলাদা করেছে।

জমিদার বাড়ির ঠিক দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত রং মহল। চমৎকার বাড়িটি দেখলেই বোঝা যায় জমিদার কেমন সংস্কৃতি প্রিয় ছিলেন! নাচ গানসহ অন্যান্য সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এখানেই হত। সে সময়ের সব জমিদার বাড়ির সাথেই ছিল রং মহল। লতাপাতা আর ফুলেল নকশা করা বাড়িটি স্বাগত জানায় সকলকে হাসিমুখে। নকশা, স্থাপত্যশৈলীতে ধরা পড়ে সে সময়ের গাম্ভীর্য্য, নান্দনিকতা।

উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি এই স্থাপত্যটিতে রয়েছে অনেক গুলো কাঠের জানালা। এ ছাড়াও ছাদের নিচের অংশে কাঁচের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা করা হয়েছে যা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে। বাড়ির সাথে আছে একটি সুন্দর পুকুর। পুকুর ঘাটটি যেন এখনো আগের মতোই আছে।

কীভাবে যাবেন:

মহাখালী বাসটার্মিনাল থেকে শেরপুরের ড্রিমল্যান্ড, তুরাগ, আনন্দ অথবা অন্যান্য সার্ভিস রয়েছে। নামবেন নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করলেই দেখিয়ে দেবে জমিদার বাড়ি যাওয়ার পথ।

কোথায় থাকবেন:

দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসতে পারেন অথবা স্থানীয় হোটেলে অবস্থান করতে পারেন। শেরপুরে গিয়ে শহরের হোটেলগুলোতে দরদাম করে রুম ভাড়া নেওয়া যায়।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: মার্চ 8, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.