কল্যাণ দীঘি – রাজবাড়ী

রাজবাড়ি শহর থেকে ছয় মাইল পশ্চিমে ইসলামপুর ইউনিয়নে রাজধারপুর গ্রাম। রাজধারপুর গ্রামের পাশে কল্যাণ দীঘি (Kollan Dhigi )। বিরাট আকারের এই দীঘি বর্তমানে সমতল বিরাট বিলে পরিনত হলেও দীঘির সীমানা নির্ধারন কষ্টকর হয় না। অনেকের মতে দীঘিটি ১৬ খাদা জমি নিয়ে ( ১৬ পাখিতে ১ খাদা এবং ১ পাখি= .২৫ শতাংশ এর অবস্থান ছিল। এত বড় দীঘি এ অঞ্চলে দৃষ্ট হয় না।

প্রথমে রাজা সীতারামের খনন কাজ। এক সময়ে এ অঞ্চলে রাজা সীতারামের করতলগত হয়। রাজা সীতারাম তার রাজধানী মুহম্মদপুরে (মাগুরা) অনেক দীঘি খনন করেন। রাম সাগর, সুখ সাগর, কৃষ্ণ সাগর নামক দীঘি তার কীর্তি। কথিত আছে সীতারামের খানজাহান আলীর মত একদল বেলদার সৈন্য ছিল। সংখ্যায় ২০০। তারা যুদ্ধের সময় ছাড়া অন্য সময় জলাশয় খনন করে লোকের জলকষ্ট দূর করত। কথিত আছে সীতারাম প্রতিদিন নব খননকৃত জলাশয়ের জলে স্নান করতেন।

বেলগাছিতে রাজা সীতারামের খননকৃত একটি পুকুর আছে। মতান্তরে কল্যাণ দীঘি খান জাহান আলীর কীর্তি। খানজাহান আলী ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে যশোর, খুলনা জয় করে খলিফাতাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। খানজাহান আলী ধর্মপ্রচার ও জনহিতকর কাজের জন্য বহু দীঘি খনন করেন। বাগেরহাটের খানজাহান আলী দীঘি তার খননকৃত অন্যতম দীঘি।

খানজাহান আলী পরে পীর হিসেবে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে একদল ধর্ম প্রচারককে উত্তর পূর্বাঞ্চলে পাঠান। তার সময়ে এ দীঘি খননকৃত এ ধারনাও বিচিত্র নয়। খানজাহান আলী ও রাজা সীতারামের খনন কাজের কিচু পার্থক্য দেখা যায়। মুহ্ম্মদপুরে রাজা সীতারামের খননকৃত দীঘি সকল বাগেরহাটে খানজাহান আলীর খননকৃত দীঘি সকল থেকে আকার আয়তনে ছোট। কল্যাণ দীঘির আকার আয়তন অনেক বড় যা খানজাহান আলীর খননকৃত দীঘির মত। দীঘি খননের সময়কাল ধরলে দেখা যায় খানজাহান আলীর খননকৃত হলে তা হবে প্রায় ৬০০ শত বৎসর পূর্বে আর সীতারামের খননকৃত হলে হবে ৪০০ শত বছর পূর্বে।

যে কোন দীঘি যত্নাভাবে বা অন্য কোন কারনে তা বসে যেতে পারে। কাজেই ৬০০ শত বা ৪০০ শত বছর বিবেচনায় রেখে খানজাহান বা সীতারামের খনন কিনা তা বলা যাবে না। তবে সুলতানি আমলে কল্যাণ দীঘির পাশ্ববর্তী অঞ্চলটি বর্ধিষ্ণু অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পায়। এ অঞ্চলের সেকআরা গ্রামে ষোড়শ শতকের প্রথম দিকে সাহ পাহলোয়ান ও সাহ সাদুল্লার মতো জবরদস্ত পীর আউলিয়ার আগমন ঘটে।জায়গাটি সুলতানি আমলেই মুসলিম প্রাধান্য লাভ করে যার কারনে পীর আউলিয়াদের আগমন ঘটে। ধর্মপ্রচারে উদ্দেশ্যে খানজাহান আলীর খলিফাতাবাদ রাজ্যে জনসাধারণের কল্যাণার্থে এ দীঘি খনন হতে পারে।

https://goo.gl/NJFTnF

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 21, 2018

কল্যাণ দীঘি – রাজবাড়ী, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. বিষয়টিতে উপযুক্ত রেফারেন্স যুক্ত করা আবশ্যক। নইলে জনগন বিভ্রান্ত হবে। ইতিহাস গবেষণা করে একাডেমীক স্বীকৃত হওয়ার পর গ্রহণযোগ্য হয়। তবে গল্প বা কথিত আকারে লিখলে এসবের প্রয়োজন নেই। এই লেখার গুরুত্বপূর্ণ ভুল হল দীঘি রাজধরপুরে নয় খালকুলা গ্রামে অবস্থিত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.