ঐতিহ্যবাহী শকুনী দীঘি – মাদারীপুর

মাদারীপুর জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি দর্শনীয় স্থান শকুনী দীঘি(Oitojjobahi Sakuni Dighi)। এটি মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। জনশ্র”তি রয়েছে ১৯৪৩ সালে মাদারীপুর শহরকে প্রমত্তা আড়িয়াল খাঁ নদের পাড় থেকে নতুন করে স্থাপনের জন্য দক্ষিণে সরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ দীঘিটি খনন করা হয়। উড়িয়া এবং বিহারী শ্রমিকেরা প্রায় এক বছরের বেশী সময় ব্যয় করে এ দীঘিটি খনন করে। ফলে মাদারীপুর নতুন শহরটি নীচু ভূঁমি, উঁচু ভূমি করে মানুষের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়। অন্য দিকে দীঘিটি শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তোলে। দীঘিটির মিঠা পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মাছ। দীঘির চারপাশে রয়েছে মাদারীপুর পুরানো কোর্ট ভবন যা বর্তমানে বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজ, শিশু একাডেমী, টেনিস ক্লাব, স্বাধীনতা অঙ্গন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, শহীদ মিনার, সার্কিট হাউস, মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমীসহ অনেক প্রতিষ্ঠান যা শহরের সৌন্দর্যকে মনোরম করে তুলছে।

ইপত্রে এই লেকটির নাম ‘শকুনি লেক’ হলেও স্থানীয়রা এটিকে ‘মাদারীপুর লেক’ হিসেবে চেনে। একটি মাছ ধরার জাল দিয়ে এই বিশাল লেকটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে যার একটি অংশে মাছ চাষ করা হয়। বর্তমানে এই লেকটি একটি বিনোদনকেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। বিকালবেলা এই লেকে এতটাই জনসমাগম হয় যে এখানে কোন খালি জায়গা পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। শহরের বেশিরভাগ মানুষ পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে এখানে আসেন অবসর সময় কাটাতে। লেকের আশেপাশে সুস্বাদু মিষ্টি পাওয়া যায়। এসব মিষ্টির জন্য মাদারীপুর জেলার সুখ্যাতি রয়েছে।

কিভাবে যাবেন:

ঢাকা থেকে মাদারীপুরের সড়কপথে দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার এবং এই জেলায় পৌছাতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগবে। মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে দিনের ২৪ ঘণ্টাই বাস ছেড়ে যায়।
মাদারীপুরে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে মাওয়া ঘাটে পৌছাতে হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া ঘাটে বিআরটিসি, প্রচেষ্টা, ইলিশ, গুনগুন, আজমেরি পরিবহন যাতায়াত করে। বিআরটিসি বাস টার্মিনাল গুলিস্তানে অবস্থিত এবং এই বাসে যেতে ভাড়া পরবে ৭০/- টাকা। উত্তরা এবং রামপুরা থেকে ছেড়ে যায় প্রচেষ্টা পরিবহন এবং এই বাসের ভাড়া ১০০/- টাকা। যাত্রাবাড়ী থেকে ৮০/- টাকা ভাড়ায় মাওয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ইলিশ, গুনগুন, আজমেরি পরিবহন। মাওয়া ঘাট থেকে ফেরি, স্পীডবোট, ট্রলার অথবা লঞ্চে করে আপনাকে কাওড়াকান্দি অথবা মাঝিকান্দি ফেরি ঘাটে পৌছাতে হবে। এখান থেকে লোকাল বাস অথবা ট্যাক্সিতে করে মাদারীপুরে পৌছাতে পারবেন।

মাদারীপুর শহর থেকে রিকশা অথবা যেকোনো মোটরচালিত বাহনে করে আপনি এই লেকে পৌছাতে পারবেন।

ঢাকা থেকে মাদারীপুরে সড়কপথে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
১। চন্দ্রা পরিবহন
ভোর ৬:৩০ মিনিটে প্রথম এবং রাত ৯টায় শেষ বাস ছেড়ে যায়।
ভাড়াঃ ১৮০/- টাকা।
ধরনঃ চেয়ার কোচ
কাউণ্টারের ঠিকানাঃ গাবতলি ঢাকা
ফোনঃ ০১৭১৮০৩৩৮৬৬, ০১৭৩৯১৪০৮১৯, ০১৬৭১৯৭৫৭৯৯

২। সোহেল পরিবহন
ভোর ৭:৩০ মিনিটে প্রথম এবং রাত ১০টায় শেষ বাস ছেড়ে যায়।
ভাড়াঃ ১৬০/- টাকা।
ধরনঃ চেয়ার কোচ
কাউণ্টারের ঠিকানাঃ গাবতলি ঢাকা
ফোনঃ ০১৭১২০৪০৭৭৭, ০২-৮০২৩৬৭১

কোথায় থাকবেন:

মাদারীপুরে থাকার জন্য হোটেল ব্যবস্থাপনা বেশ ভাল। এখানে আপনি বিভিন্ন মানের হোটেলে থাকতে পারবেন। এখানে থাকার জন্য হোটেল ও গেস্টহাউজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ

১। জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, ফোনঃ ০৬৬১-৬২০৬৩
২। পলাশ হোটেল, ফোনঃ০১৭১৬১৪৬৫১৮
৩। সৈকত হোটেল, ফোনঃ ০৬৬১-৬১৫০৫, ০১৯১৪৪৬৭২৫৮

 

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 9, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.