ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের তুলশীগঙ্গা নদীর পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত আছরাঙ্গা দীঘি (Ashranga Dighi) একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। দীঘিটির সঠিক কোন ইতিহাস লিপিবদ্ধ না থাকলেও জনশ্রুতি আছে তৎকালীন রাজশাহী জেলার তাহিরপুর আদি রাজবংশের পুর্বপুরুষ ভট্টনারায়ণের ১৩শ বংশধর মৌন ভট্ট ৯ম শতকে এই দীঘিটি খনন করেন।
বরেন্দ্র এলাকা হওয়ায় বর্ষাকাল ব্যতীত বছরের অন্য সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার দরুন কৃষি জমি সমূহ চাষের অনুপযোগী হয়। ঐ কৃষি জমি সমেূহকে চাষের উপযোগী করার জন্য মৌন ভট্ট ৯ম শতকের প্রারম্ভে এই দীঘির খনন কাজ শুরু করেন। নবম শতকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই দীঘির কাজ শেষ হয় এবং সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় দীঘিটি পানিতে টইটুম্বর হয়ে ওঠে। এই দীঘির পানি দ্বারা অগ্রহায়ন মাসে আমন ধানের ফলন হয়। পৌষের শুরুতে ধানের ক্ষেতগুলো পেকে লাল রঙ ধারন করত। আর এ কারনেই এই উপজেলার নাম ক্ষেতলাল হয়েছে।
দিঘীটির আয়তন প্রায় ২৬.০০ একর। দীঘিটির চারপাশে চারটি বাধাই করা ঘাট আছে। সনাতন ধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের তীর্থস্থান হিসেবে দীঘিটি খ্যাতি লাভ করে। দীঘিটিকে কেন্দ্র করে মাজার, মন্দিরসহ সনাতন ধর্মীয় পুরাকীর্তি গড়ে ওঠে। কথিত আছে এ দীঘির জল কাকচক্ষু জলের ন্যায় স্বচ্ছ, সুমিষ্ট ও ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শীতকালে বিভিন্ন প্রকার অতিথি পাখির আগমনে দীঘিটি হয়ে উঠে কলকাকলিতে ভরপুর।
কিভাবে যাবেন
গাবতলী থেকে রাজশাহীগামী যেকোন বাসে উঠে পড়ুন। রাজশাহী থেকে প্রথমে ক্ষেতলাল উপজেলা, এরপর সেখান থেকে আছরাঙ্গা দীঘি।