হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(Hajee Mohammad Danesh Bishwabidyalay) বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তরাঞ্চলের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দেশের মানবসম্পদের বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির লক্ষে উত্তরবঙ্গের সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যেশ্যকে সামনে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় রংপুর বিভাগের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তেভাগা আন্দোলন এর জনক ও এ অঞ্চলের জনদরদী কৃষকনেতা হাজী মোহাম্মদ দানেশ এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। এটি উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে শীর্ষস্থানীয়।এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (AETI) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। এটিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প” গ্রহণ করা হয়। ৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড: মো: মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। এটি উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর বিভাগের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। কোর্স-ক্রেডিট-সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত । বর্তমানে ৮টি অনুষদের অধীনে ২২ টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন ১৩০ একর।

 

 

ক্যাম্পাসঃ

ক্যাম্পাস এর পাশেই ঢাকা -দিনাজপুর মহাসড়ক অবস্থিত ৷ দিনাজপুর শহর হতে ক্যাম্পাস এর দূরত্ব মাত্র ১০ কি.মি.। একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মননশীলতা বিকাশের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিভিন্ন সময়ে আয়োজন করা হয় আন্তঃঅনুষদ, আন্তঃহল টুর্নামেন্ট,আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ অন্যান্য মেধাবিকাশের কর্মকাণ্ড। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গড়ে উঠেছে অর্ক সাংস্কৃতিক জোট, সেঁজুতি সাংস্কৃতিক ঐক্য, রোটারিযাক্ট ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি, এইচএসটিইউ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক, প্রোগ্রামারস অ্যারেনা, নেটওয়ার্কিং ক্লাব, প্রথম আলো বন্ধুসভা, এইচএসটিইউ ফিল্ম ক্লাব, দি ডিইলি স্টার রিডারস ক্লাব সহ অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক সংগঠন।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সবুজ গাছপালার সমারোহ। আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন, আছে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার, স্বাস্থ্যবানদের জন্য আছে জিমন্যাশিয়াম, খাবার প্রিয়দের জন্য ক্যান্টিন। এছাড়া আড্ডাবাজদের জন্য ডি-বক্স চত্বর ও টিএসসির মতো সব আধুনিক স্থাপনা। যেখানে নিয়মিত বসে শিক্ষার্থীদের আড্ডা চলে সারাদিন। অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল(একটি বিদেশী শিক্ষার্থীদের), ৩টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসন বিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম। এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব,২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন,১টি শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বাক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন,বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)।আছে একটি ভি. আই. পি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও এ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও।মেধাকে আরো বিকাশের জন্য গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির আকর্ষণীয় সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার।

 

একাডেমিক কার্যক্রমঃ

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। প্রতি সেমিস্টার সমাপ্ত হয় ২১ সপ্তাহে। যেখানে ইংরেজি মাধ্যমে ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি বাস্তব জ্ঞান অর্জনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষা সফর। মেধাবীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন পদক ও বৃত্তির ব্যবস্থা। প্রতিটি সেমিস্টারে ক্লাসে অংশগ্রহণ, কুইজ টেস্ট, মিড সেমিস্টার পরীক্ষা এবং ফাইনাল পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ করা হয়। সেমিস্টার সম্পন্ন করার বিষয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় আইন-কানুন। যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই সকল নিয়ম সম্পর্কে অবগত হতে পারে। একাডেমিক কার্যক্রম বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।গ্রেড পদ্ধতি নিম্নরুপ:

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারি 22, 2018

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.