মাগুরা জেলা শহর হতে ১০ মাইল পূর্বে মধুমতি নদীর তটে মাগুরা জেলায় অবস্থিত মহম্মদপুর উপজেলা। এই মহম্মদপুর উপজেলা শহর এলাকায় ছিল রাজা সীতারামের রাজধানী ও বাসস্থান (Raja Sitaram Roy Rajbari)। এটা মাগুরা একটি গৌরবের স্থান।
মহম্মদপুরে রাজা সিতারাম রায়ের রাজধানী ছিল। সীতারামের আদিনিবাস ছিল বীরভূম জেলায় জাতিতে তিনি উত্তর রাঢ়ীয় কায়স্থ ছিলেন। তাঁর পিতা উদয় নারায়ণ প্রথমে রাজমহলে নবাব সরকারের কাজ করতেন, পরে তিনি ভূষণা পরগণায় তহশিলদার পদে নিযুক্ত হয়ে আসেন। উদয়ন নারায়ন ক্রমে একটি ক্ষুদ্র তালুক ক্রয় করেন এবং মধুমতি নদীর অপর পারে হরিহর নগরে বাস করিতে থাকেন।
সীতারামের মাতা দয়াময়ী তেজস্বিনী নারী ছিলেন। কথিত আছে অল্প বয়সে একটি খড়েগর সাহায্যে এক দল ডাকাতকে তিনি পরাস্থ করিয়াছিলেন। মহম্মদপুরে আজও ‘‘দয়াময়ী’’ তলা নামে একটি স্থান দৃষ্ট হয়; এই স্থানে সীতারামের সময়ে বারোয়ারী উৎসব হইতো।
সীতারামের অভুত্থান সর্ম্পকে নানারূপ কাহিনী প্রচলিত আছে। কেহ কেহ বলেন যে সপ্তদশ শতকের শেষভাগে বাংলার তদানিন্তন ভৌমিক রাজগণ যথাসময়ে রাজকর না দেওয়ায় দিল্লীর বাদশাহ সীতারামকে তাঁহাদের নিকট হইতে বাকী রাজকর আদায়ের জন্য সৈন্য সামন্তসহ প্রেরণ করেন। সীতারাম আসিয়া তাঁহাদিগকে যুদ্ধে পরাস্ত ও রাজ্যচ্যুত করিয়া স্বয়ং তাহাদের রাজ্য অধিকার করেন এবং পরে বাদশাহের সাথে বিবাদের ফলে তার পতন ঘটে।
মতান্তরে, সীতারাম ভূষণা পরগণার অন্তর্গত মধুমতির পূবর্বপারস্থিত হরিহর নগর নামক একটি তালুকের অধিপতি ছিলেন।
কিভাবে যাবেনঃ
মাগুরা সদর হতে ২৮ কি.মি. দূরে মহম্মদপুর উপজেলায় রাজাবাড়ী নামক স্থানে রাজা সীতারাম রায়ের বাড়িটি অবস্থিত। মহম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড হতে আধা কিলোমিটার উত্তরে পাকা রাস্তার পার্শ্বে রাজবাড়ির অবস্থান। রিক্সা, ভ্যান অথবা পায়ে হেটে যাতায়াত করা যায়।
অবশ্য ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত বোয়ালমারি উপজেলা শহর থেকেও এই স্থানে যাওয়া যায়। বোয়ালমারী বাজার হতে এই স্থান ৬/৭ মাইল পশ্চিমে।