সাগরদীঘি (Sagardighi) বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্বে সাগরদীঘি নামক একটি স্থান রয়েছে। এখানে ১২.৮০ একর জমির উপর একটি বিখ্যাত দীঘি আছে। দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় পাল বংশীয় সাগর রাজা।
দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় পাল বংশীয় সাগর রাজা। এই দিঘির পশ্চিমপাড়ে শান বাঁধানো ঘাটলার ধ্বংসাবশেষ এখনও লক্ষ করা যায় যা সাগর রাজার বাসস্থান বলে ধারণা করা হয়। এখানকার পূর্ব নাম ছিলো লোহানী। সাগরদীঘি থেকে সামান্য দক্ষিণে এর চেয়েও প্রকান্ড এক দীঘি আছে যার আয়তন হবে ২৫ একর জার নাম বইন্যদীঘি । সাগর রাজার পুত্র বনরাজ পাল এটি খনন করেছিলেন।
সাগরদীঘি ব্লকে সাগরদীঘি নামে এক বিশাল জলাশয় আছে। পূর্ব-পশ্চিমে যার দৈঘ্য প্রায় এক মাইল। আনুমানিক অষ্টম শতকে মহীপালের রাজত্বকালে এই দীঘি খনন করা হয়েছিল।
জনশ্রুতি আছে, রাজা মহীপাল ব্রহ্মহত্যার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য এই জলাশয় খনন করেছিল। একদা রাজা মহীপাল উত্তরবঙ্গ থেকে বিতাড়িত হয়ে চলে আসেন উত্তর রাঢ়ে। পরিবার পরিজন, কুলপুরোহিত ও অনুগত প্রজাদের সঙ্গে নিয়ে রাঢ় দেশের চন্দনবাটিতে রাজধানী স্থাপনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথে তাঁর রানীকে দেখতে গিয়ে এক ব্রাহ্মণ সন্তান গাছ থেকে পড়ে মারা যান। ওই ঘটনায় রাজা দুঃখিত হয়েছিলেন এবং ব্রহ্মহত্যার পাপ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কুলপুরোহিতের কাছে বিধান চেয়েছিলেন। কুলপুরোহিত বলেছিলেন যে, রাজমহিষীর রূপ-লাবণ্য ব্রহ্মহত্যার কারণ। তাই রানীকে ওই ব্রাহ্মণ যুবকের মৃত্যুর স্থান থেকে পায়ে হেঁটে রাজধানীর দিকে যেতে হবে এবং রানীর হেঁটে যাওয়া রাস্তার দৈঘ্য সমান জলাশয় খনন করতে হবে। জলাশয় খননের পর জল ওঠেনি। পরে স্বপ্নাদেশে সাগর নামে এক ধর্মপরায়ণ স্থানীয় কুমোর এসে এক কোদাল মাটি কাটতে দীঘিতে জল ওঠে। এর জন্য তাঁকে দীঘির জলে আত্মবিসর্জন দিতে হয়। সেই কারণে এই দীঘির নাম হয়েছিল সাগরদীঘি বা সাগর কুমোরের দীঘি। আর এই দীঘির নাম থেকেই এলাকার নাম হয় সাগরদীঘি।
কিভাবে যাবেনঃ
বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্বে সাগরদীঘি অবস্থিত।
অবস্থান
টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা সদর অবস্থিত।