শিব মন্দির, তারাশ – সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হলো- রাধা গোবিন্দ মন্দির, শিব মন্দির, মথুরা দিঘী, বড় কুঞ্জবন, উলিপুরের দিঘী, শিশু পার্ক, বৌদ্ধ বিহার।

শরতের শেষের দিকে শুরু হয় দুর্গাপুজা। তখন তো এখানকার গোবিন্দ মন্দিরে বাজে অবিরাম ঢোলবাদ্য, আকাশে ওড়ে রঙ্গিন ফানুস। কীর্তন গান পুরো এলাকার আকাশবাতাস মাতিয়ে রাখে। আর তাড়াশে চারিদিকে ফুটে থাকে কত না কাশফুল।

তাড়াশে বেড়াতে এসে জানা যাবে এখানকার বিখ্যাত কপ্লিশ্বের শিব মন্দির(Shiv Mandir), দেবী মন্দির, বাসুদেব ও গোপীনাথ বিগ্রহের মন্দিরের কাহিনি। এখানকার রাজবংশের পূর্ব পুরুষ বলরাম প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি মন্দির, থানা রোডে কুঞ্জবন নামক সর্ববৃহৎ জলাশয় ও তাড়াশের রাজবাড়ীর ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন কীর্তির নিদর্শন।

তাড়াশে ভগ্নপ্রায় জোড়বাঙ্গালার গায়ে ১৬৬১ খিস্টাব্দের খোদিত লিপি থেকে জানা যায়, এখানকার গোপীনাথ বিগ্রহের সেবায়েত ছিলেন নাগবংশীয় কায়স্থ। এই তাড়াশের বিনোদ রায়, গোবিন্দজী, রশিক রায়, কপিলেশ্বর শিব প্রভৃতি যে কয়েকটি বিগ্রহের মন্দির রয়েছে, এর মধ্যে কপিলেশ্বর ও গোবিন্দ মন্দির অন্যতম।
ঘুরে আসুন ঐতিহ্যে ভরপুর তাড়াশ
আর এসব দেখতে দেখতেই এক নিমিষেই ফিরে যাবেন অতীত যুগে। তখন স্মৃতিতে ভেসে উঠবে হয়তো বা পুজা পার্বণের সেই পুরোনো দিনগুলোর কথা। এখানকার প্রতিটি মন্দিরের গায়ে রয়েছে অপরুপ কারুকাজ। প্রাচীনকালে ক্ষুদ্র ইট দিয়ে এসব মন্দির তৈরি হয়েছিল।

আরেকটি বিষয় হলো চলনবিলের তাড়াশে গিয়ে কৌতূহল জাগবে তাড়াশের নামকরণ নিয়ে যে কিভাবে তাড়াশ নামটি নামকরণ হলো। এক সময় তাড়াশের নাম শুনেই মনে ত্রাস বা তরাসের সৃষ্টি হতো। অনেকে ধারণা করেন, তরাস শব্দ থেকে তাড়াশ নামের উৎপত্তি হয়েছে। তাড়াশের পাশে (প্রাচীনকালের নাম ছিল চাঁন্দেরগাঁও) বর্তমানে বিনসাড়া গ্রাম। রিক্সাভ্যান করে যেতে পারেন সময় লাগবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট।

সেখানে গেলে দেখতে পাবেন বাংলার কিংবদন্তী বেহুলা সুন্দরীর বাবা বাছো বানিয়া ওরফে সায় সওদাগরের স্মৃতিময় কিছু স্থান। সেখানে গিয়ে কয়েকটি কূপ দেখা যাবে। একটি কূপের নাম জীয়ন কূপ। এই কূপটি দেখতে বড় অদ্ভুত। বড় বড় ইটের গাথুনি দিয়ে নির্মিত। যার একটি কূপের মধ্যে আরো ৩ টি কূপ।

ওখানে গিয়ে লোকমুখে আরো জানা যাবে বাছোবানীয়া ছিলেন মনসা পুজারী। দুধ পুকুর নামে তার একটি পুকুর ছিল। পুকুরটি নাকি সাপদের জন্য দুধে ভর্তি থাকতো। এখনো আছে সেই পুকুর কিন্তু সেখানে দুধও নেই সাপ নেই।

কিভাবে যাবেন:

ঢাকা থেকে সড়কপথে বিভিন্ন বাসে বা যানবাহনে তাড়াশ যেতে হবে। রাজশাহীগামী লোকাল বা গেইটলক গাড়িতে চড়ে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের মহিষলুটিতে নামতে হবে। মহিষলুটি থেকে তাড়াশের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। ভ্যানযোগে ভাড়া জনপ্রতি ১৫টাকা করে নেবে। আর ঢাকা থেকে মহিষলুটি জনপ্রতি বাস ভাড়া নেবে ৩৭০ টাকা ও রাজশাহী থেকে ভাড়া নেবে ১৫০ টাকা করে।

যেখানে থাকবেন:

রাত্রিযাপন করার জন্য তাড়াশ থানার সামনেই রয়েছে ডাকবাংলো। এক কক্ষে ২ সিটে ভাড়া ৩০০ টাকা করে। এ ছাড়া রয়েছে গণকল্যাণ রির্সোট সেন্টার, ব্রাক এনজিও’র রেস্ট হাউজসহ সরকারি গেস্ট হাউজ। যেসব গেস্ট হাউজে থাকবেন সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তাছাড়া তাড়াশে ভাল রেস্টুরেন্ট আছে।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: February 21, 2018

শিব মন্দির, তারাশ – সিরাজগঞ্জ, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. তাড়াশে বেড়াতে গেলেই কল্পনায় ভেসে উঠে হিন্দু রাজাদের ঐতিয্য। সেই সময়য়কার জীবন জীবন জীবিকা ও জনপদের সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করে। আহা! কতই না সুন্দর ছিল আমাদের অতীত ইতিহাস। বংলার মূল কৃষ্টি- কালচার ভরপুর তাড়াশে বার বার যেতে ইচ্ছে করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.