বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু (Jamuna Bridge/Bangabandhu Bridge) বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ৫ম এবং বিশ্বের ৯২তম দীর্ঘ সেতু। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে এটি উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশের ৩টি বড় নদীর মধ্যে বৃহত্তম এবং পানি নির্গমনের দিক থেকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ নদী যমুনার উপর এটি নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। এই সেতু নির্মাণের ফলে জনগণ বহুভাবে লাভবান হচ্ছে এবং এটি আন্তঃআঞ্চলিক ব্যবসায় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সড়ক ও রেলপথে দ্রুত যাত্রী ও মালামাল পরিবহণ ছাড়াও এই সেতু বিদ্যুৎ ও প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালন এবং টেলিযোগাযোগ সমন্বিত করার সুযোগ করে দিয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেতু এশীয় মহাসড়ক ও আন্তঃএশীয় রেলপথের উপর অবস্থিত। এ দুটি সংযোগপথের কাজ সম্পন্ন হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক সড়ক ও রেলসংযোগ স্থাপিত হবে।
বঙ্গবন্ধু সেতুকে বর্তমানে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে ন্যাস্ত করা হয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির অধিবাসীদের সাথে অন্যান্য অংশের সংযোগ সাধনের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক অঙ্গনে এটা বিশাল প্রভাব রাখছে। ইতিপূর্বে সড়কপথে ও নৌফেরীর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বগুড়া যেতে যেখানে ১২ ঘন্টা সময় লাগত, সেখানে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে সময় লাগে মাত্র ৬ ঘন্টা। সেতু উপর দিয়ে রেলওয়ে ট্রাফিকও পরিবহণ করা হয়। এর মাধ্যমে জাতীয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস গ্রিডও পরিপূর্ণতা পেয়েছে।