লোহাগাড়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য – চট্টগ্রাম

দক্ষিণ পূর্ব উপমহাদেশীয় জীববৈচিত্র্যের বিশাল সমৃদ্ধ বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত এবং এশিয়ান হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য(Lohagara Bonno Prani Ovoyaranno) সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক অপরূপ লীলাভূমি। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে অভয়ারণ্যের উল্লেখযোগ্য প্রাণী এশিয় হাতি ছাড়া বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বার সহ ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও চার প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, সাত প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৩ প্রজাতির পাখি এবং ১০৭ প্রজাতির সুসজ্জিত বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গঠিত চিত্রহরিৎ বিশাল বনভূমি। বৃক্ষের সৌন্দয্যের সমন্বয়, উঁচু-নিচু পাহাড়ে সৃজিত বাগান আর বাগানে পাখিদের মিষ্টি সুরে মুখরিত অভয়ারণ্যটি একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। যা থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য মতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বনাঞ্চল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নগঠনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়াসহ ৭টি সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে অভয়ারণ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বনাঞ্চল সুরক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২০০৩ সালে এলাকায় চুনতি ও জলদী রেঞ্জের অধীনে ৭টি বিট অফিস স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্য এলাকায় বনপুকুর, প্রাকৃতিক গর্জন বনাঞ্চল, এশিয় বন্যহাতির অবাধে বিচরণ, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হ্রদ, বনপুকুর ফুটট্রেইল, জাঙ্গালীয়া ফুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, ষ্টুডেন্ট ডরমিটরী, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্র, ইকোকর্টেজসহ বিভিন্ন প্রতিবেশ পর্যটন বা ইকোট্যুরিজম স্থাপন করা হয়। সংরক্ষিত বন এলাকায় ভ্রমণের জন্য ৮ জন প্রশিক্ষিত ট্যুরগাইড সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে সহজে অভয়ারণ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ এশিয় হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর এবং পাখির অবাধ বিচরণ উপভোগ করা যায়। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিস্থ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অভয়ারণ্যের অবস্থান। অভয়ারণ্যের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানান, এটিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য ইকোট্যুরিজমের কিছু বিশেষ আকর্ষণ বিশেষ করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরী করলে এটি দেশের অন্যতম ইকোপার্কে পরিণত হবে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। এদিকে অভয়ারণ্যের বিশাল এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা (আইপ্যাক) ইউএসআইডি’র অর্থায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আইপ্যাকের সাইট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ খাইরুজ্জামান জানান, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে অচিরেই অভয়ারণ্যটি দেশের সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়। সহজেই মনোরম পরিবেশে এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে। সহ-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইতোমধ্যে অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য বহুলাংশে উন্নয়ন করা হয়েছে।

কিভাবে যাবেন

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিস্থ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অভয়ারণ্যের অবস্থান

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: February 13, 2018

লোহাগাড়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য – চট্টগ্রাম, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. লেখাটি পড়ে অনেক ভাল লাগল। তবে লেখায় ছবি ব্যাভার করলে দারুন হত।

  2. আমার বাড়ি লোহাগাড়াতেই। আমি নিজেও এতোদিন জানতাম না যে এমন একটা সুন্দর জায়গা লোহাগাড়াতে আছে। ধন্য সেবা অ্যাপ কর্তৃপক্ষকে এতো সুন্দর তথ্য উপহার দেওয়ার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.