দেবী চৌধুরাণীর রাজবাড়ী – রংপুর

সমারোহের মাঝে প্রায় ৮০ একর সম্পত্তির উপর ইতিহাসখ্যাত প্রজা হিতৈষী জমিদার দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি(Devi Chowdhuryan Rajbari)।
রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলা কার্যালয় ও পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের অনতিদুরে এ জমিদার বাড়ি অবস্থিত। পীরগাছার স্থানীয় লোকজন মন্থনার জমিদার বাড়িকে রাজবাড়ি বলে ডাকে।
রাজবাড়ির চারি দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দৃষ্টি নন্দিত ছোট বড় অনেক পুকুর ।বাড়ির পিছনে ইতিহাসের কালের সাক্ষী হয়ে কোনমতে বেঁচে আছে দেবী চৌধুরানীর খননকৃত ঢুসমারা খাল অর্থাৎহঠাৎবা অকষ্মাৎসৃস্টি ।দেবী চৌধুরানী এ খাল দিয়ে নৌকাযোগে নদী পথে বিভিন্ন গোপন অবস্থায় যাতায়াত করতেন ।
বিশাল এলাকা নিয়ে ছড়ানো ছিটানো এ রাজবাড়ির অসংখ্য দালান আজ ধ্বংসপ্রায়। দালানের ইট,পাথর ও সুড়কি খুলে পড়েছে ।
দেয়ালের জীর্ণতা ও শেওলার অাঁচড়ে পরগাছা জন্মেছে । ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজবাড়ির নাট্য মন্দির ও কাচারী ঘরটি বর্তমানে পীরগাছা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজবাড়ির ভিতরে নির্মিত প্রাচীন মন্দিরগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। জমিদার জ্ঞানেন্দ্র নারায়ন রায় কর্তৃক নির্মিত অপূর্ব কারুকার্য মন্ডিত দেড় শতাধিক বছরের পুরানো দৃষ্টি নন্দিত ত্রিবিগ্রহ মন্দির ধ্বংসের অপেক্ষায় দিন গুনছে ।
এখানে অন্নপুর্ণ বিশেশ্বর, শিব ও হরিহর তিনটি বিগ্রহ এক মন্দিরের পাশাপাশি কক্ষে স্থাপন করা রয়েছে । বাংলার মন্দির দাম্পত্য ইতিহাসে এক অনন্য বিরল দৃষ্টান্ত । ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ও তাদের এদেশীয় অনুচর দেবী সিং এর অবর্ণনীয প্রজা পীড়নের বিরুদ্ধে তৎকালীন ভারতবর্ষে প্রথম যে নারী অস্ত্র হাতে রক্তক্ষয়ী ফকির সন্যাসী ও ১৭৮৩ সালে রংপুরর প্রজা বিদ্রোহের নেতৃতে দিযেছিলেন সেই কিংবদন্তির অগ্নিকন্যা ছিলেন পীরগাছার মন্থনা জমিদার। মন্থনা জমিদার দেবী চৌধুরানীর আসল নাম ছিল ‘‘জয়াদুর্গা দেবী চৌধুরানী’’। সাহিত্য সম্রা্ট বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় তার রচিত আনন্দমঠ ও দেবী চৌধুরানীর নামে দু’খানা বই রচনা করেছিলেন। এখানে প্রতি বছর হিন্দু সম্প্রদায় পূজা পার্বন পালন করেন।

এ ছাড়াও এখানে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন অনুষ্ঠানাদি পালন কওে থাকেন। মড়হনা জমিদার জ্ঞানেন্দ্র নারায়নের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ১৯২৮খ্রিঃ একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা পরে তার নামানুসারে জে এন উচ্চ বিদ্যালয় নাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় সমাজসেবীদের প্রচেষ্টায় মন্থনা জমিদার রাজবাড়ী নামে রাজবাড়ী স্কুল প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ঐতিহাসিক মন্থনা জমিদার প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ীর সহানসমূহকে ঘিরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা সহজ হবে ।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: ভ্রমণ পাগল,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: March 9, 2018

দেবী চৌধুরাণীর রাজবাড়ী – রংপুর, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. আমরা চাই এই জমিদার বাড়িটি সরকারিভাবে একটি শিশুপার্ক ও জাদুঘর করা হোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.