ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক – গাইবান্ধা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিণমারী গ্রামে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রশিদুন্নবী চাঁদ ১৯৯৫ সালে ১৭ একর জমিতে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন বিনোদন কেন্দ্র ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক (Dreamland Educational Park)। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ড্রিমল্যান্ডই গাইবান্ধার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। এতে রয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা, দেশি-বিদেশি বাহারি গাছগাছালি, ফুল, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনদের ভাস্কর্য আর শান বাঁধানো পুকুর।

ড্রিমল্যান্ডের সুদৃশ্য প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বেশ কিছু সরু রাস্তা। রাস্তার দুই ধার জুড়ে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা রং ও গন্ধের অসংখ্য ফুল গাছ, রয়েছে অর্কিড আর ক্যাকটাসও। দর্শনার্থীদের বসার জন্য কিছুদূর পরপর রয়েছে বেঞ্চ আর শেড। ড্রিমল্যান্ডে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে এসব শেডে বসে বিশ্রাম নিতে পারেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া বৃষ্টি বা রোদে শেডের নিচে বসে উপভোগ করা যায় ড্রিমল্যান্ডের অপরূপ সৌন্দর্য।

ড্রিমল্যান্ডের মাঝখানে রয়েছে শান বাঁধানো সুন্দর একটি পুকুর, এর চারপাশ ঘিরে বাহারি গাছের সমাহার। সব মিলিয়ে এখানকার পরিবেশ, নানা রংয়ের ফুল, গাছপালা, পশুপাখির ভাস্কর্য সহজেই যে কারো মন ভরিয়ে দেয়।

গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জাতীর জনক শেখ মুজিবুর রহমানসহ বরেণ্য ব্যক্তিদের সুদৃশ্য ভাস্কর্য। এখানে ২৫৫ জন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ও গুণিজনের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ইতিহাসে ঘৃণিত ব্যক্তি ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খান, মোস্তাক আহমেদের ভাস্কর্যও। এ যেন বিনোদনের ফাঁকে ফাঁকে ইতিহাস শেখা।

এখানকার ভাস্কর্যগুলো নির্মাণ করেছেন আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রিমল্যান্ড নামে এই বিনোদন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সুদৃশ্য একটি মানচিত্র, আরও রয়েছে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র।

এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন জীবজন্তুর ভাস্কর্য। শিশুরা এসব জীবজন্তুর পিঠে চড়ে খেলা করতে পারে। এছাড়া তাদের জন্য একটি শেডে বলসহ বিভিন্ন খেলনা রয়েছে।

প্রবেশ মূল্য: ১০ টাকায় টিকেট কেটে ড্রিমল্যান্ডে প্রবেশ করতে হয়।

থাকা-খাওয়া:

ড্রিমল্যান্ডে খাওয়ার জন্য ছোট ছোট কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডের দোকান থাকলেও এখানে রাত থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে পলাশবাড়ীতে রাত যাপন করার জন্য রয়েছে শিল্পি আবাসিক হোটেল। পলাশবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় করে যেতে হয় এখানে। এ হোটেলে থাকা খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার মহাখালী, গাবতলী কিংবা কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে বা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে গাইবান্ধায় আসা সম্ভব। ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় এসি বাসের ভাড়া সাড়ে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা এবং নন এসি বাসের ভাড়া সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। আর ট্রেনের ভাড়া ২৫০শ’ থেকে ৩৫০শ’ টাকা। বাসে ঢাকা থেকে পলাশবাড়ী যেতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে।

গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে পলাশবাড়ীর দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা টেম্পুতে করে গাইবান্ধা থেকে পলাশবাড়ী যাতায়াত করা যায়।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: March 14, 2018

ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক – গাইবান্ধা, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.