রাঙ্গনিয়া কোদালা চা বাগান – চট্টগ্রাম

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম):: নগর জীবনের একপেশে ক্লান্তিময় জীবনকে মুহুর্তে প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুলার জন্য অবাক করা এক পর্যটন কেন্দ্রের নাম রাঙ্গুনিয়ার কোদালা চা বাগান(Rangunia Kodala Cha Bagan)। একদিকে পাহাড় ঘেরা সবুজের সাথে মেঘের লুকোচুরির অপূর্ব সন্ধির দৃশ্য অন্যদিকে চা বাগানের পাশ ঘেঁষে লুসাই কন্যা কর্ণফুলীর মন মাতানো ঢেউ যে কাউকে মুহুর্তে সতেজ করে দেবে।

এছাড়াও চা বাগানের দৃষ্টি নন্দন ব্রিটিশ বাংলো, পাখির খঁচিমিচির শব্দ আর চা শ্রমিকদের প্রতিদিনকার ক্লান্তিহীন কর্মযজ্ঞ বিনোদন প্রেমিকদের স্বপ্ন দেখাবে রূপকথার অজানা এক রাজ্যের।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নে গড়ে উঠা এই চা বাগানটি দেশের প্রথম ও শীর্ষ চা-বাগান গুলোর মধ্যে অন্যতম। উৎপাদন ছাড়াও চা বাগানটি ইতিমধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে পর্যটন র্স্পট হিসেবে। প্রতিদিনকার শত শত পর্যটকদের আনাগোনা আর বাগানের আর্কষনীয় মনোরম দৃশ্য ধারণ করতে ছুটে আসছে বিভিন্ন ইলেকট্রন্ক্সি চ্যানেল , টেলি ফিল্ম, চলচ্চিত্র নির্মাতারা । স্যুটিং হচ্ছে নানা ছবি, টেলিফিল্মের। আর এসব কিছু মিলে কোদালা চা বাগান এখন রাঙ্গুনিয়ার এক ব্যস্ততম এলাকার নাম।

এলাকায় জনশ্রতি রয়েছে বৃটিশরা কর্নফুলী নদী দিয়ে আসা যাওয়ার সময় কোদালা চা বাগানের বিস্তীর্ণ জায়গা দেখে চা বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর সেই থেকে কোদালা চা বাগান গড়ে উঠে। ১৮৯৪ সালে চা বাগানটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৬ সালে তৎকালীন সরকার ব্যক্তি মালিকানায় লিজ দিয়ে চা-বাগানগুলো ছেড়ে দেন। এর মধ্যে প্ল্যাটাস বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে কোদালা চা-বাগান পরিচালনা করে আসছে।

লোকসানের কবলে ১৯৯৩ সালে প্ল্যাটাস বাংলাদেশ থেকে আনোয়ার গ্রপ চা-বাগানটি লিজ নিয়ে নেন। আনোয়ার গ্রুপও লাভের মুখ দেখতে না পাওয়ায় ২০০৪ সালে ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্র্র্যাক কোদালা চা বাগানের লিজ নেন। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ চা বোর্ডের আওতায় কোদালা চা বাগান সরকার থেকে লিজ গ্রহণ করে ব্র্যাক আড়াই হাজার একর জায়গা চা বাগানের জন্য। গত বছর সাড়ে ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল এবার লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ কেজি চা। সারাদেশে ১৬২ চা বাগানের মধ্যে এখন ৩য় পজিশনে রয়েছে কোদালা চা বাগান।

এছাড়া চা ও রাবার বাগানের পাশাপাশি নানা প্রজাতির গাছের চারা নবনায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি আম, আগর, নিম ও মুলি বাঁেশর চাষও করা হয়েছে এই বাগানে। প্ল্যান্টাস বাংলাদেশ ও আনোয়ার গ্রুপ কোদালা চা বাগান করে লাভের মুখ না দেখলেও ব্র্যাক কোদালা চা বাগান লিজ নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে দক্ষ পরিচালনায় চা বাগানটি এখন ব্র্য্রাকের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশের চা শিল্পে কোদালা চা বাগানের চা গুনগত মান ও শীর্ষ চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্টানে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।

দেশের চা বাগানের মধ্যে কোদালা চা বাগানই সর্ব প্রথম। চা বাগানের সিনিয়র সহকারি ব্যবস্থাপক রাশেদ মাহমুদ রুবেল জানান, দিন দিন এ বাগানের চা উৎপাদন বাড়ছে। চা উৎপাদনের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে বাগানটি। কর্ণফুলী নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে দৃষ্টি নন্দন, সবুজ সমতল আর উচু-নিচু পাহাড় ঘিরে কোদালা চাবাগানের মন মাতানো দৃশ্য যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারে।

কিভাবে যাবেন

চট্ট্রগ্রাম হতে চট্টগ্রাম কাপ্তাই মহাসরক বিরতিহীন বাসে করে নেমে সরফভাটা গোডাউনে নেমে সিনজি করে সরাসরি কোদালা চা বাগানে যাউয়া যায়।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: আবদুর রহমান,
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: July 18, 2022

রাঙ্গনিয়া কোদালা চা বাগান – চট্টগ্রাম, সম্পর্কে পর্যটকদের রিভিউ।

  1. সরাসরি বাস নিয়ে ছাত্র নিয়ে কোদালা চা বাগান যাওয়া সম্ভব কিনা যদি বলেন উপকার হত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.